বরিশালে সরকারি অনলাইন গুরুর হাটে তেমন সাড়া মেলেনি ক্রেতাদের। তবে জমে উঠেতে শুরু করেছে জেলা ও মহানগরীর পশুর হাটগুলো। এবার দেশীয় গরুর দখলে বরিশালের কোরবানির পশুর হাট। বিশেষ করে কুষ্টিয়া, স্থানীয় বিভিন্ন খামার ও গ্রামগঞ্জের গরুর আধিক্য পশুর হাটে। দাম গত বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ হাজার বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা। এখন পর্যন্ত পুরো দমে বিক্রি শুরু না হলেও শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই গরু কিনছেন কিছু ক্রেতা। এদিকে জেলা কিংবা মহানগরীর পশুরহাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশ মানুষই মাস্ক ব্যবহার করেন না। এ নিয়ে নজরদারিও নেই কর্তৃপক্ষের।
বরিশাল জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল আলম জানান, জেলায় ৪ হাজার ২শ’ ২৬টি বড়-ছোট পশুর খামারে মজুদ রয়েছে ৩৮ হাজার ৩শ’ ৯৫টি গরু এবং ৮ হাজার ২শ’ ২৪টি ছাগল। সরকারি নির্দেশে গত ২৫ জুন জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ‘অনলাইন কোরবানির হাট বরিশাল’ নামে একটি অনলাইন পশুর হাট চালু করে। মোট ১০ হাজার গরু ও ছাগলের ছবি ও বিক্রেতার নাম আপলোড করা হয় অনলাইন হাটে। কিন্তু অনলাইনে তেমন ক্রেতার সাড়া মিলছে না।
এদিকে বরিশাল মহানগরী এবং জেলায় মোট ২২টি গরুর হাটের অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে মহানগরীর কাউনিয়া বিসিক রোডের বটতলা এলাকায় এবং অপরটি নগরীর রূপাতলী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুর ঢালে। অপর ২০টি হাট বসছে জেলার ১০ উপজেলায়।
শুক্রবার সদর উপজেলার চরমোনাই মাহফিল মাঠ, বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রা এবং উজিরপুরের সোনারবাংলা এলাকায় বসে কোরবানির পশুরহাট। চরমোনাইর বিশাল মাহফিল মাঠে কয়েকশ’ গরু প্রদর্শন করা হয় গতকাল। কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতার দেখা মেলেনি। বিশাল মাঠে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গরু প্রদর্শন করলেও মাস্ক ছিলো না বেশিরভাগ ক্রেতা বিক্রেতার মুখে। একই অবস্থা গৌরনদীর কসবা গরুর হাট, বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রা এবং উজিরপুরের সোনারবাংলা হাট সহ অন্যান্য পশুর হাটে।
গৌরনদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান রিপন জানান, গৌরনদীর কসবায় রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত পশুর হাট। এই হাটে এবার বেশিরভাগ গরু এসেছে কুষ্টিয়া থেকে। স্থানীয় খামারীদের এবং গ্রামগঞ্জের গরুও এসেছে এই হাটে। তবে সে তুলনায় হাটে ক্রেতা নেই। যারা আসছেন দেখে শুনে দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন না বলে তিনি জানান।
উজিরপুর থেকে এমদাদুল কাশেম সেন্টু জানান, উজিরপুরে একাধিক গরুর হাটে এবার দেশীয় গরুর আধিক্য। হাট শুরু হলেও বিক্রি জমে ওঠেনি। আরও দুই-একদিন পর হাটে পুরোদমে পশু বিক্রি শুরু হবে বলে তিনি জানান। এই উপজেলার হাটগুলোতেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করেন না। সামাজিক দূরত্বও পুরোপুরি উপেক্ষিত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিক সেন্টু।
বানারীপাড়ার গোলাম মাহমুদ রিপন জানান, দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ গুযাচিত্রা পশুর হাটে এবার প্রচুর গরুর আমদানী হয়েছে। সব গরুই দেশীয় জাতের। প্রচুর দর্শনার্থী এলেও সে তুলনায় বিক্রি হচ্ছে না। গুয়াচিত্রা হাটে গতকাল অর্ধেকের বেশী ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক ছিলো না বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিক মাহমুদ রিপন।
স্থানীয় সরকার বিভাগ বরিশালের উপ-পরিচালক শহীদুল ইসলাম জানান, এবার কোরবানির পশুরহাটগুলোতে কঠোর নজরদারি করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনহাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে ওই হাটের ইজারা বাতিল সহ ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ