আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের হত্যাকারী, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজ ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের ইতিহাস শুরু জিয়াউর রহমানের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে। তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া।’
আর আজকে সেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকার অবৈধ সরকার, ফ্যাসিস্ট সরকার, স্বৈরাচার সরকার। আমি মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই শেখ হাসিনার সরকার যদি অবৈধ সরকার হয়, ফ্যাসিস্ট সরকার হয় ও স্বৈরাচারী সরকার হয়- তাহলে জিয়াউর রহমান কি ছিল?’
আজ মঙ্গলবার নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘আপনাদের নেতা জিয়াউর রহমান রাত ১২টার পরে বঙ্গভবনে ঢুকলেন, বিচারপতি সায়েমের বিছানায় পা রাখলেন, বললেন সাইন ইট। বিচারপতি সায়েম কাগজটা পড়লেন দেখলেন তার পদত্যাগপত্র। তিনি জিয়াউর রহমানের দিকে তাকালেন, দেখলেন জিয়াউর রহমান কোমর থেকে পিস্তলটা বের করলেন এবং ৮ থেকে ৯ জন সেনা অফিসার তাকে ঘিরে ধরলেন, জিয়াউর রহমানের এক হাতে স্টিক আর অন্য হাতে পিস্তল। বিচারপতি সায়েম বললেন আমি ভয় পেয়ে পদত্যাগ পত্রে সাইন করলাম। এই রাতের অন্ধকারে পিস্তল ঠেকিয়ে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের কর্মী তো আপনি।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি, কে তাকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন? সংবিধানের কত ধারায় তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছেন? তিনি ছিলেন অবৈধ স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৭৭ সালের ৩০ মে নির্বাচন করেছেন হ্যাঁ-না ভোট, অন্য কেউ প্রার্থী ছিল না। ৯৮ ভাগ ভোট দেখিয়েছেন হ্যাঁ এর পক্ষে। ডিসি ও এসপি সাহেবেরা ভোট কেটে বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। তারপরেও সামরিক আইনের দু’টি ধারা রয়েছে ২৯২ ও ২৯৩ ধারা। এই ধারা মতে, কোন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় নির্বাচন করতে পারেন না। জিয়াউর রহমান সেই ধারা ভেঙে নির্বাচন করলেন। পরে যখন সেনাবাহিনীতে কথা উঠলো, তখন ব্যাকডেটে জিয়াউর রহমান এরশাদ সাহেবকে সেনাবাহিনীর প্রধান করলেন। সেই মির্জা ফখরুল গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে বলেন স্বৈরাচার- আরে যার জন্ম অবৈধ বিএনপিতো তাদের দল। ৭১-এর খুনি যুদ্ধাপরাধী, অতি বিপ্লবী আর পরাজিত মুসলিম লীগার, যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করো না- তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে বিএনপি।’
এস এম কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আপনারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন, কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আপনারা জননেত্রী শেখ হাসিনার শান্তি সমাবশে ১১টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করালেন। আল্লাহর রহমতে সেদিন শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন জীবন দিলেন। ৫০০ বোমায় ৬৩টি জেলা রক্তাক্ত করলেন, রক্তাক্ত হলো বাংলাদেশ। এই হলো মির্জা ফখরুলের গণতান্ত্রিক দল বিএনপি।
তিনি বলেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান নিজে স্বীকার করেছেন সেদিন বিএনপি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে দশ ট্রাক অস্ত্র এনেছিল বাংলাদেশে। সেই অস্ত্র চোরাচালানকারীদের দল হলো বিএনপি। আর বিদ্যুতের কথা বলেন- আপনাদের নেতা বিএনপির প্রতিমন্ত্রী মেজর জেনারেল আনোয়ার কবির তালুকদার বলেছেন- বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ খাতে ৬ হাজার কোটি টাকার লুটপাট হয়েছে। এইতো হলো আপনাদের দল।’
এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাটোর জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক