রাজধানীর নারিন্দায় আযুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে মাদকের কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টায় নারিন্দা ফকিরচান কমিউনিটি সেন্টারের পাশের একটি ছয় তলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই গোডাউনের সন্ধান পায় র্যাব-২ এর একটি দল।
এর আগে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মূলহোতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় ৩৫০০ বোতল মদ ও মদ তৈরীর কাজে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবার গুড়া ও গাঁজা সদৃশ্য বস্তু এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বেশ কিছু অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাই যে- কামরাঙ্গীরচরে খোলামোরা জায়গায় একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষধের আড়ালে এক প্রকার পানীয় বিক্রি করা হয়। তাদের ছেলেরা এই আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে এবং তা খাওয়ার পর মাদকাসক্তদের মতো আচরণ করে থাকে। পরবর্তীতে র্যাব-২ এর গোয়েন্দা দল গোপনভাবে আয়ুর্বেদিকের দোকান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে এবং তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেই পানীয়ের মধ্যে গাজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়াও তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণ, এসিড জাতীয় দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা গ্রহণ করলে কিডনিসহ শরীরের নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, র্যাব-২ এর এই দল নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায় এবং কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন আউটলেটে অভিযান চালিয়ে মূলহোতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- মূলহোতা মো. ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), মো. রাসেল (২৯), মো. হৃদয় (২৯), মো. মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), মো. সবুজ মিয়া (১৮), মো. নান্টু (৫২)।
গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, এরা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় প্রস্তু ও বিক্রি করে আসছে। কথিত আয়ুর্বেদিক পানীয়ের প্রতি বোতলের দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। আরো জানা যায় যে, তারা ২-৩ বছর যাবৎ আয়ুর্বেদিক ওষুধের ক্ষতিকর ও নেশা জাতীয় এই পানীয় উৎপাদন ও বিক্রি করছে। তারা রাজধানীর নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায় উক্ত পানীয় উৎপাদন করে কামরাঙ্গীরচর, কাটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় আউটলেটের মাধ্যমে ওই পানীয়টি বিক্রি করে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন আউটলেট হতে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ বোতল উক্ত মাদক মিশ্রিত পানীয় বিক্রয় হতো বলে জানা যায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ