৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:১৯

কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা জানাল ইউএনএফপিএ ও ব্র্যাক

অনলাইন ডেস্ক

কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা জানাল ইউএনএফপিএ ও ব্র্যাক

কক্সবাজারের ৬টি উপজেলায় কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ, রোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামর্থ্য শক্তিশালীকরণ এবং হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ২০২১ সাল থেকে কাজ করে আসছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। কমিউনিটি সাপোর্ট টিম (সিএসটি) এর মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচি। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করছে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং বিশ্বব্যাংক।

কক্সবাজারের ৬টি উপজেলায় কার্যক্রম বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও কার্যক্রম জানানোর উদ্দেশে ঢাকার আমারি হোটেলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংস্থা দুটি। কোভিড প্রতিরোধ কর্মরত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অংশীদার সংস্থা, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এতে যোগ দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। অতিথি বক্তা হিসেবে যোগ দেন ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ডা. মোরশেদা চৌধুরী, ব্র্যাকের জেমস পি গ্র্যান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অভিজিত সাহা, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ-এর হেলথ সিস্টেমস অ্যানালিস্ট দেওয়ান মো. এমদাদুল হক, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ-এর চিফ অফ হেলথ বিভাভেন্দ্র এস রাঘুবানশি ও ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ-এর পরামর্শক ডা. নাসিমা সুলতানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্।

কমিউনিটি সাপোর্ট টিম কার্যক্রমের প্রথম পর্যায় ঢাকা মহানগরের দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০২১ সালে বাস্তবায়িত হয়। পরবর্তী পর্যায়ে কক্সবাজারের ৬টি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়নে কার্যক্রমের বিস্তার ঘটানো হয়। কক্সবাজারে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য 'আচরণ পরিবর্তনে সহায়ক যোগাযোগ' কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এর আওতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে কোভিড প্রতিরোধের অনুকূল আচরণ ও চর্চা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, শিখন এবং কার্যক্রম বিস্তারে উদ্ভাবনমূলক এবং স্থানীয় পরিপ্রেক্ষিতে সাযুজ্যপূর্ণ বিভিন্ন পন্থা গ্রহণ করা হয়। এর মাধ্যমে এসব এলাকার অধিবাসীরা মাস্ক ব্যবহার, যথার্থ উপায়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং কোভিড টিকা নেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। সরাসরি যোগাযোগ, গণমাধ্যম, নিউমিডিয়ার বিভিন্ন পন্থা, এবং অংশগ্রহণমূলক চর্চার মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোভিড মোকাবেলা ছাড়াও সরকারকে টিবি, ম্যালেরিয়া, এনসিডি ইত্যাদির মতো অনেক হস্তক্ষেপে সহায়তা করছে ব্র্যাক। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে আমরা অনেক দূর যেতে পারব।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের জীবদ্দশায় আরেকটি মহামারী দেখতে হতে পারে। অন্যান্য সামাজিক প্লাটফর্ম থাকা সত্ত্বেও সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে আচরণ পরিবর্তন করা এখনও গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিটি সাপোর্ট টিম এ ধরনের কার্যক্রমে খুবই সফল হয়েছে।
  
অভিজিত সাহা সকল এলাকায় কোভিড-১৯-এর লক্ষণ বিষয়ে সচেতনতার পরিস্থিতি, সংক্রমণের মাধ্যম, প্রতিরোধের পন্থা (হাত ধোয়া, মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা) এবং টিকাদান বিষয়ে চিত্র তুলে ধরেন। সমীক্ষা অনুযায়ী, ৭০% মানুষ সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি কমে এ তথ্য সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, ৮০% মানুষ কোভিডের টিকা এই রোগের নেতিবাচক প্রভাব হ্রাসে সহায়ক সে বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন।

ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ডা. মোরশেদা চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯-এর মতো সম্ভাব্য আগামী মহামারীগুলোর জন্য আমাদেরকে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রান্তিক মানুষের আসল প্রয়োজনগুলোর প্রতি যথার্থ অর্থে মনোযোগ দিতে পারি।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর