নির্যাতন নয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণেই নওগাঁর সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
সোমবার সকালে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এ তথ্য জানিয়ে জানিয়েছেন।
আর এরই মধ্যে র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছেও হস্তান্তর করা হয়েছে। রবিবার (২ এপ্রিল) বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। জেসমিনের মৃত্যুর নয় দিন পর রামেক ফরেনসিক বিভাগ তার এই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলো।
রামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, সুলতানা জেসমিনের মরদেহের ময়নাতদন্তের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তারা ফরেনসিক বিভাগের তিনজন বসেছিলেন। বোর্ড বসিয়ে তারা সেই রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। তারপরই এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন। এর পর সেই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন রবিবার বিকালে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন আরও জানান, সুলতানা জেসমিনের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রথমে গিয়েছিলেন ফরেনসিক বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তাজনীন জাহান। তারই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার কথা ছিল। তবে তিনি বিভাগীয় প্রধানকেও মর্গে ডাকেন। তার ডাকে বিভাগীয় প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন আরেক প্রভাষক জামান নিশাত রায়হানকে সঙ্গে নিয়ে মর্গে যান। পরে জেসমিনের মরদেহ তারা একসঙ্গে দেখেন। এর পর তিনজনের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত করেন।
এর আগে র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে জেসমিনকে আটক করে। অফিসে যাওয়ার পথে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। ওই দিন দুপুর ১২টার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সুলতানা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মার্চ সকালে তিনি মারা যান।
জেসমিনের মৃত্যুর পর দিন ২৫ মার্চ রামেক এর মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এর পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জেসমিনের মরদেহ গোসল করানো হয় রাজশাহীতেই। পরে কাফন পরানো মরদেহ কফিনে করে নওগাঁয় নিয়ে যায় র্যাব। ওই দিন বিকালে নওগাঁ সরকারি কবরস্থানে র্যাবের উপস্থিতিতেই মরদেহ দাফন করেন স্বজনরা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন