১০ জুন, ২০২৩ ১৫:২৪

লিটনেই আস্থা রাখতে চান নগরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

লিটনেই আস্থা রাখতে চান নগরবাসী

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ফাইল ছবি

দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত ৫ বছরে রাজশাহীর উন্নয়ন করেছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এবার উন্নয়ন সম্পন্নের পাশাপশি কর্মসংস্থানে জোর দিয়ে সামনে এগুচ্ছেন তিনি। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার লিটনের প্রতিই আস্থা রাখতে চান নগরবাসী।

রাজশাহী সিটিতে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন গত ৫ বছরে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ সিস্টেম, গ্যাস পাইপ লাইন সংযোগ, আলোকায়ন, উচ্চ বহুতল ভবন নির্মাণ, নদীর ধারের উন্নয়ন, পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র করা থেকে শুরু করে যে সব অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন এবং রাজশাহী সিটিকে একটি উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। ফলে এবারের নির্বাচনে লিটনের বিকল্প দেখছেন না নগরবাসী। লিটনকেই আবারও মেয়র হিসেবেই দেখছেন রাজশাহীর মানুষ। অর্থনীতির পালেও লাগিয়েছেন হাওয়া। তাই এবারের নির্বাচনে তিনি কর্মসংস্থান নিশ্চিতে জোর দিয়ে মাঠে নেমেছেন। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন। এবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যারা হয়েছেন, তারা নগরবাসীর কাছে অপরিচিত। তাই লিটনের পক্ষেই ঝুঁকেছেন সবাই। লিটনও আছেন অনেকটা চাপমুক্ত।

পাঁচ বছর আগের দেখা নগর এবং বর্তমান রাজশাহীর নগরচিত্রই বলে দেয় মেয়র লিটনের পরিকল্পায় নগরীতে কতটা পরিবর্তন হয়েছে। শুধু এই দৃশ্যমান উন্নয়নেই বিষয়টি থেমে নেই রাজশাহীর অর্থনীতির চাকা। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগসহ বহুমাত্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতিশীল হয়েছে নগর অর্থনীতি। আর এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের এ মাস্টার পরিকল্পনার কারিগর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। যার অভূতপূর্ব উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন এখন নগরবাসী।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তথ্য বলছে, দ্বিতীয় মেয়াদে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এখনও চলমান আছে উন্নয়ন। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি আরও অনেক কাজ চলমান।

সংস্থাটির তথ্যমতে, নগরীর বিমান চত্বর থেকে বিহাস পর্যন্ত নতুন চারলেন সড়ক, তালাইমারী থেকে আলুপট্টি পর্যন্ত চারলেন সড়ক, বিলসিমলা রেলক্রসিং মোড় থেকে কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত চারলেন সড়ক, ভদ্রা রেলক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চারলেন সড়ক, বিলসিমলা থেকে সিটি হাট পর্যন্ত চারলেন সড়ক করা হয়েছে। আগে দুই লেনের এই সড়কগুলোতে দুর্ভোগ ছিল নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নগরীতে ব্যক্তি বিনিয়োগও ছিল খুবই নগণ্য। তবে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন হয়নি; প্রতিটি রাস্তার ফুটপাতকে ঘিরে পরিচালিত হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষের বাড়তি আয়ের সুযোগ। সড়কগুলোর বিশেষায়িত গুণের প্রশংসা এখন জাতীয়ভাবেও স্বীকৃত। পর্যটন স্পট হিসেবেও এই রাস্তাগুলো ব্যবহার হচ্ছে। এতে একই সড়কে কয়েক স্তরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। যা আজ থেকে ৫ বছর আগে কেউ কল্পনাও করেনি।

শুধু এই প্রধান সড়কগুলোই নয়, নগরীর বুধপাড়া এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ, সপুরা থেকে পোস্টাল একাডেমি পর্যন্ত সড়ক, সাগরপাড়া বটতলা মোড় থেকে রুয়েটের সীমানা প্রাচীর, উপশহর মালোপাড়া-রাণীবাজার সড়ক, মনিচত্বর থেকে জাদুঘর মোড় সড়ক, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক সংলগ্ন সড়কসহ পদ্মাপাড় জুড়ে যোগাযোগ ও সৌন্দর্যবর্ধনে যে কাজ হয়েছে, তা এই নগরীকে বাসযোগ্য গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি সিটি হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি স্মার্ট রাজশাহীর পথকেও ত্বরান্বিত করেছে।

রাসিকের তথ্য বলছে, মেয়র লিটনের প্রচেষ্টায় নগরীতে বিকেএসপি আঞ্চলিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। হাইটেক পার্ক গড়ে উঠেছে। শিল্প নগরী-২ ও আধুনিক নভোথিয়েটরের কাজও শেষের দিকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি গড়ে তোলা এসব প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সার্বিকভাবেই রাজশাহীর অর্থনীতির চাকা ভিন্ন মাত্রা নিয়ে গতিশীল হয়েছে।

নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় আবাসন ও নির্মাণ শিল্পেও নিরব বিপ্লব হয়েছে। নগরীতে জমির দাম প্রায় ১৫ থেকে ২০ গুণ বেড়েছে। প্রত্যেকটি স্তরে স্তরে ব্যক্তি বিনিয়োগ বাড়ছে। ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়েছে। বিস্ময়ের এই উন্নয়নে অর্থনীতির চিত্রও বদলে গেছে।

রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু জানান, একটি এলাকার অর্থনীতি কোন দিকে যাবে, তা নির্ভর করে সে অঞ্চলের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর। রাজশাহীর ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতিতে কতটা উন্নতি হয়েছে, তা দৃশ্যমান। রাসিক ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করায় নারীরাও ঘরে আর বসে নেই। অনলাইন ঘরে বসে বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা করছেন। এক কথায় ব্যবসা-বাণ্যিজের ক্ষেত্রেও নীরব বিপ্লব এসেছে। যা এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন বলেন, রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে অর্থনীতির উন্নয়নের পূর্বশর্ত। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়, মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। রাস্তাঘাট না থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে না। মেয়র লিটনের আমলে জনপ্রত্যাশিত এই মৌলিক কাজগুলো হয়েছে। এতে রাজশাহীতে নতুন নতুন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের শাখা স্থাপন হচ্ছে। রাজশাহীতে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার জন্য বিনিয়োগ বেড়েছে।

রাসিকের সদ্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একটি অঞ্চলের মানুষের জীবনমান কেমন হবে, তা সে অঞ্চলের অর্থনীতির উপর নির্ভর করে। রাজশাহী এক সময় অনেক পিছিয়ে ছিল। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল। জনগণের ভোটে প্রথম মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরপরই টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ শুরু করি। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৫ বছরে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার অনেক কাজই বাস্তবায়ন হয়েছে। অনেক কাজ বাকি আছে। কুচক্রী মহল প্রথম দিকে নানা অপপ্রচার চালালেও এর সুফল এখন সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। বিনিয়োগ বেড়েছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আর এই উন্নয়নের ফলশ্রুতিতেই রাজশাহীর অর্থনীতির চাকা যে কোনো সময়ের চেয়ে গতিশীল হয়েছে, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর