রংপুরের হারাগাছ সোনাতলা এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে এসেছিলেন রাজমিস্ত্রি হাফিজুর রহমান, একই এলাকার ফেরদৌস মিয়া ও চান মিয়া। তারা সকলেই দিন হাজিরায় কাজ করেন। রবিবার প্রচণ্ড শীতের সাথে হিমেল হাওয়া বিরাজ করায় দুপুর ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনো কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাড়িতে স্ত্রী ছেলেমেয়ে রয়েছে।
প্রতিদিনের মতো শ্রম বিক্রি করতে না পারায় তাকে স্ত্রী ছেলেমেয়েসহ আধপেটা থাকতে হবে। ক’দিন থেকে এ অঞ্চলে কনকনে ঠাণ্ডা, হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে ছন্দ পতন ঘটেছে। অনেকেই কাজ বন্ধ রাখায় শ্রমজীবী মানুষরা শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না।
বেসরকারি এক পরিসংখ্যান মতে, উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক রয়েছে, যারা প্রতিদিন দিন হাজিরায় শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এদের কেউ বাসা বাড়িতে কামলা, কৃষাণ, কেউ রাজমিস্ত্রির যোগালী, কেউ কাঠ মিস্ত্রির যোগালী হিসেবে কাজ করেন। তারা প্রতিদিন জেলা শহরগুলোর একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেই পয়েন্ট থেকে বিভিন্নজন এসে তাদের কাজের জন্য নিয়ে যান। সারা দিন শ্রম বিক্রি করে যে অর্থ পান, তা দিয়ে এ ধরনের শ্রমিকদের সংসার চলে।
গত ক’দিন থেকে প্রকৃতি বিরুপ আচরণ করায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে প্রকৃতি। সেই সাথে শীতের ছোবলে অনেকের বাড়ির কাজসহ নানা ধরনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে এ অঞ্চলে। ফলে এসব শ্রমিকের ভাগ্যে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। তারা কোনো কাজ পাচ্ছেন না। ফলে বেকার অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে এসব শ্রমজীবী মানুষের।
রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি ও হিমেল হাওয়ার কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।
শীতের কারণে বিভিন্ন জেলা শহরের লোকজনের চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এদিকে বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা ও আলু আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই