আওয়ামী শাসনামলে এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও তাদের সহযোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করে ভিসি চত্বর হয়ে প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছে। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, যে শিক্ষকরা একটি শিক্ষিত জাতি গঠনের লক্ষে কাজ না করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা-ওয়াজেদের হাতকে শক্তিশালী করেছিল তারা এখনো বুক চেতিয়ে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে হেঁটে বেড়ায়। অথচ আমরা দেখেছিলাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কলাম লেখার কারণে ড. মোর্শেদ হাসান খানকে তার চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী দোসর শিক্ষকরা এখনো তাদের স্ব পদে বহাল রয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্রদল ইতোমধ্যে কয়েকবার সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ও এদের দোসরদের বিচারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু প্রতিবার আশ্বাস পেলেও আশ্বাসের কোনো বাস্তব রূপ দেখতে পাইনি। কালক্ষেপণ না করে বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানকে কলুষিত করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করুন। নাহলে আমাদের কর্মসূচি আগামীতে আর সহিষ্ণু কর্মসূচি থাকবে না।
ঢাবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমন বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ দ্বারা নির্যাতিত হয়ে ঢাবি প্রশাসনের কাছে বিচারের জন্য গেলে তাদের নামে মামলা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হতো। এমনকি পরীক্ষার সময় ছাত্রলীগ স্বৈরাচারবিরোধী শিক্ষার্থীদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করতো। আজ সে সকল কর্মকর্তারা পুনর্বাসিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দালালি করলে ছাত্রদল বসে থাকবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে স্বৈরাচারের দোসরদের প্রতিহত করবে।
ঢাবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী শাসনামলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ দ্বারা শতশত শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা। কিন্তু আপনারা এখনো ফ্যাসিস্টের দোসর এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? এখনো কেন ছাত্রলীগ বিজয় ৭১ হলের লিফটে জয় বাংলা লিখে যায়?
এ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র সহসভাপতি নাসিরুদ্দিন শাওনসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ