বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ১৭টি রুট ও ঢাকাসহ সব দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাফ ভাড়া নিয়ে শ্রমিকদের বিরোধ, বাস ভাঙচুর ও একটিতে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালিক সমিতির সভাপতি।
রবিবার সকাল থেকে কোনো রুটে বাস চলছে না, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
অন্যদিকে শ্রমিকদের হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ায় বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে বিক্ষোভ করেছে সহপাঠীরা। তারা জানান, হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. মোসারেফ হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিয়ে সরকারি কোনো গেজেট নেই। তবুও বাস মালিক–শ্রমিকরা হাফ ভাড়া নেয়। কিন্তু শনিবার রাতের ঘটনাটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শতাধিক বাস ভাঙচুর, একটি বাসে আগুন, ৫০টি কাউন্টার ও ল্যাপটপ ভাঙচুর—সব মিলিয়ে ৪–৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, বাস মেরামত না হওয়া পর্যন্ত চলাচল স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। তবে রবিবার সন্ধ্যায় প্রশাসন, বিএম কলেজ অধ্যক্ষ, মালিক–শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রতিদিন নথুল্লাবাদ টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন রুটে প্রায় ৫০০ বাস ছাড়ে এবং সমসংখ্যক বাস আসে। অভ্যন্তরীণ রুটে চলে আরও ১৭০টি বাস। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় প্রায় চার হাজার শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা বিপাকে পড়েছেন।
বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির বরিশাল মহানগর সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, “যে কারণে ঘটনা ঘটেছে, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
সাকুরা পরিবহনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক পলাশ হাওলাদার জানান, তাদের ৫০টি বাসের প্রতি বাসে ২০টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি ছিল। সব টিকিটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বাস না পেয়ে অনেক যাত্রী বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে রওনা হন।
এদিকে বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা অভিযোগ করেন, “বাস শ্রমিকদের সঙ্গে থাকা আওয়ামী প্রেতাত্মারা হামলা চালিয়েছে।” তারা টার্মিনালের সিন্ডিকেট ভেঙে নতুনভাবে বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন, “নথুল্লাবাদ টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি, তবে বাইরের জেলা থেকে বাস এসেছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত। শনিবার রাতের ঘটনায় দুই পক্ষের ১০–১২ জন আহত হয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি; অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিডি-প্রতিদিন/সুজন