চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনেই তৃতীয় বারের মতো আবারও শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ। সামগ্রিক ফলাফল বিচারে এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭৭ জন। গত বছর এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৮৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩৬৮জন।
পাঁচটি মানদন্ডের ভিত্তিতে এবার সেরা ২০ (বিশ) স্কুল নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তিনি বলেন, স্কুলে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর সংখ্যার মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, মোট পরীক্ষার্থীর শতকরা পাশের হার, জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা, জিপিএ’র গড় এবং প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যার পয়েন্ট মিলিয়ে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে কলেজিয়েট স্কুলের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৯৫ দশমিক ৯৭। গতবার এ সংখ্যা ছিল ৯৬ দশমিক ৩৬। দ্বিতীয় হয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও তৃতীয় হয়েছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ।
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। এটা নিয়ে অভিভাবকরাও খুবই সচেতন। ভাল ফলাফলের পাশাপাশি ভালো মানুষ তৈরির জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই সাফল্যের মূল নিয়ামক। তিনি বলেন, ২০০১ থেকে টানা ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিবারই এসএসসিতে চট্টগ্রাম বোর্ডে শীর্ষ স্থানে ছিল এ বিদ্যালয়টি। মাঝখানে দু’বছরের যাত্রাভঙ্গ। এরপর ২০১৩ সালে পুনরায় জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে গৌরব পুনরুদ্ধারের যে যাত্রা শুরু হয়েছে ২০১৫ তে এসেও তা অক্ষুন্ন রেখেছে কলেজিয়েট স্কুল।
জিপিএ-৫ পাওয়া কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী সাইদুজ্জামান বলেন, ইঞ্জিনিয়ার হয়ে এদেশের মানুষের সেবাই কাজ করতে চাই। ভালমানের ইঞ্জিনিয়ারের বড়ই অভাব। আলভি বলেণ, জেএসসিতে জিপিএ-৫ পাইনি। তখন অনেক কষ্ট পেয়েছি। সেই কষ্ট দূর হলো এবার। তৃতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত নিহাজ বিন হাশেম নিজের সাফল্যের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, শিক্ষক, আব্বু-আম্মুর আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় আমার আজকের এতো বড় অর্জন। আগামীতেও এ ধরণের ফলাফল অব্যহত থাকবে, এ প্রত্যাশা করছি।
নিলুফার হাশেম নামের একজন অভিভাবক বলেন, পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধসহ নানাবিধ রাজনৈতিক প্রতিকূলতা পার করে অনেক কষ্ঠ করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তখন প্রতি মুহুর্তে আমরা আতংকে থাকতাম কি হচ্ছে। কিন্তু ভাল ফলাফলের কারণে তখনকার সব কষ্টগুলো আর মনে পড়ে না।
চট্টগ্রামের সেরা বিশের অন্য বিদ্যালয়গুলো হলো (ক্রমানুসারে):
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডা.খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তৃতীয় স্থানে আছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজ, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, ক্যান্টনম্যান্ট ইংলিশ স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সিলবার বেলস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাছিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চিটাগাং পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কাফকো স্কুল এন্ড কলেজ, সেন্ট স্কলাস্টিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, এবং সেন্ট প্লাসিডস উচ্চ বিদ্যালয়।