সোমবার, ৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

*********************

যশোর শহরের সিটি কলেজ পাড়ার একটি বাড়িতে ডাকাতি, শিশু ধর্ষণ ও দম্পতিকে নগ্ন করে ছবি ধারণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে তারাবির নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই শিশুটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে শনিবার রাতে আত্দহত্যার চেষ্টা চালালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে এ ব্যাপারে ঘটনার শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে শনিবার রাতে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় শহরের নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া এলাকার ইব্রাহিম ওরফে টাক ইব্রাহিম, যশোরের স্থানীয় একটি পত্রিকার ফটো সাংবাদিক ইলিয়াস সাজু বাদশা, আরএন রোড এলাকার বিল্লাল, তরিকুল, সাইদুল, লাকু বিশ্বাস, রানা ও সোহরাবকে আসামি করা হয়েছে। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তরিকুল ও বিল্লালকে আটক করেছে। মামলার বাদীর স্বামী জানান, শুক্রবার (৩ জুলাই) তারাবির নামাজ শেষে বাসায় ঢুকে দেখতে পান শহরের নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া এলাকার ইব্রাহিম, একই এলাকার রানা, ইলিয়াস সাজু ওরফে বাদশাসহ সাতজন তার বাসায় অবস্থান করছে। এদের একজন তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে সোফার ওপর বসিয়ে শরীর থেকে পাঞ্জাবি খুলে ফেলে। এরপর তার বাসায় আশ্রিতা কিশোরীকে নগ্ন করে তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি তোলে। এসব ঘটনা ফাঁস করলে ছবি পত্রিকা ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

মামলার বাদী গৃহবধূ বলেন, দুর্বৃত্ত দলটি বাসার ডোর বেল চাপলে আমার নয় বছরের মেয়েটি দরজা খুলে দেয়। এরপর তারা ঘরে ঢুকে প্রথমে আমাকে নগ্ন করে কয়েকটি ছবি তোলে। তারপর হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে দুর্বৃত্তদের দুজন আমার বাসায় আশ্রিতা ১৪ বছর বয়সী শিশুকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। বাদী বলেন, কয়েকদিন আগে ওই চক্রটি আমার স্বামীর কাছে চাঁদা চেয়েছিল। চাঁদা না দেওয়ায় শুক্রবার তারা এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটায়। তিনি আরও বলেন, 'দুর্বৃত্তরা আলমারি খুলে নগদ ২৭ হাজার টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন সেট, আমার কানে থাকা সোনার ঝুমকা, নাকফুল, আমার স্বামীর পাসপোর্ট ও এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৮ হাজার টাকা তুলে নেয়। বাদীর স্বামী জানান, দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার সময় তাকে হুমকি দিয়ে যায়, এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলা হবে। এসব ঘটনার পর লজ্জা-অপমানে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ধর্ষিতা শিশুটি শনিবার ঘরে থাকা ফেয়ারনেস ক্রিম খেয়ে আত্দহত্যার চেষ্টা করে। এরপর তিনি ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে যান। পরে তাকে থানায় নেওয়া হয়। আবার সেখান থেকে পুলিশ হেফাজতে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয় শিশুটিকে। হাসপাতালে কর্তব্যরত সেবিকারা জানান, শিশুটি যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিত। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শিশুটির প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আলামত সংগ্রহ করে তা যশোর মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি শিকদার আক্কাস আলী জানান, খবর শুনে তিনি ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় ভর্তি করান। ঘটনার শিকার মেয়েটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলেও তিনি জানান।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর