রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

তুরাগের সেই দুই লাশের পরিচয় মিলেছে, ওরা ছিল ডাকাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর তুরাগ থানার দিয়াবাড়ীর কাশবনে জোড়া হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় মনির হোসেন ও ফরিদ নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র-ধারালো বঁটি ও রড। ডিবি বলছে, তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে ২০ অক্টোবর রাতে পুলিশ উত্তরার সেক্টর-১৬-এর ২ নম্বর প্লটের কাশবনঘেরা স্থান থেকে কামাল হোসেন (২৪) ও ইমন শেখ (২৫) নামে দুই ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কামাল হোসেনের বাবা শেখ জলিল বাদী হয়ে তুরাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। নিহতরা ও গ্রেফতারকৃতরা ছিলেন আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। শুক্রবার বিকালে আদাবরের ঢাকা উদ্যানে অভিযান চালিয়ে মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিন রাতেই শনিরআখড়া এলাকা থেকে ফরিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে বেরিয়ে আসে এ হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য বলে জানিয়েছেন ডিবির এসি (উত্তর) সুমনকান্তি চৌধুরী। তিনি বলেন, নিহত কামাল,  ইমনসহ গ্রেফতারকৃত মনির ও ফরিদ আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তাদের দলে অন্য দুই সদস্য হলেন রেজাউল ও আল-আমিন। এদের সবার বাড়ি ফরিদপুরে। রাজধানীর তুরাগ, উত্তরা, ফরিদপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করতেন। দিনের বেলা তারা কখনো রংমিস্ত্রি, কখনো গাড়ির ড্রাইভার-হেলপার হিসেবে কাজ করতেন।

গভীর রাতে প্রথমে তারা রোড ডিভাইডারের খণ্ড, বড় পাথর ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাস্তায় চলাচলকারী প্রাইভেট কার, সিএনজি ইত্যাদির পথরোধ করতেন। তারপর ধারালো দা, বঁটি, লোহার রড ইত্যাদি বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে যাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিতেন। কাজ শেষে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতেন লুণ্ঠিত মালামাল।

এই ভাগাভাগি থেকেই সৃষ্টি হয় কোন্দল। বিভিন্ন সময় ভিকটিম কামাল ও ইমন লুণ্ঠিত মালামালের অধিকাংশ নিয়ে নেওয়ায় বাকিদের মধ্যে এ নিয়ে সৃষ্টি হয় অসন্তোষ। সর্বশেষ ফরিদপুরে একটি ডাকাতির মালামাল ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ হয়। পরে প্রতিশোধ নিতে ফরিদ ও মনির ভিকটিম কামাল ও ইমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় তারা ডাকাতির উদ্দেশে একে একে উত্তরার ১৬ নম্বর সেক্টরে জড়ো হন। রাত ৯টার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর ২ নম্বর প্লটে কাশবনের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মনির ও ফরিদ কুপিয়ে কামাল ও ইমনকে হত্যা করেন। পরে লাশ দুটি ঝোপের ভিতর ফেলে পালিয়ে যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর