মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাজেট নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সরকারি ও বিরোধী দলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজেট নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সরকারি ও বিরোধী দলের

সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় সদস্যরা বলেছেন, এখন বাজেটের টাকা তারেক রহমানের হাওয়া ভবন ও খোয়াব ভবনের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয় না বলেই দেশের সবক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করেছেন। শিক্ষা খাতে বিএনপির শেষ বাজেটের পরিমাণের দশ গুণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির সমৃৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক শান্তি দরকার। শেখ হাসিনা সরকারকে অনেক মূল্য দিয়ে তা অর্জন করতে হয়েছে। তাই শান্তির শত্রু অশান্তির হোতাদের কোনো ছাড় নেই, এদের দমন করতেই হবে। তবে সরকারের শরিক ও বিরোধী দলের সদস্যরা বলেন, বাজেটে প্রতিবছরই ঘাটতি বাড়ছে।

বৈদেশিক ঋণ বাড়ছে। বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। কিন্তু এসব প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। কৃষি খাতে কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শিক্ষা খাতে সঠিক নজর দেওয়া হয়নি। বাজেটে ধনীদের সুযোগ দেওয়া হলেও দরিদ্রদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তারা ঋণখেলাপি কমিয়ে আনার এবং দুর্নীতি ও অপচয়ের রাষ্ট্রীয় খাত থেকে এ বাজেটকে রক্ষা করার দাবি জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া পর্যায়ক্রমে বাজেট অধিবেশনের গতকালের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সরকারি দলের সাবের হোসেন চৌধুরী, ডা. ইউনুস আলী সরকার, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, মাহফুজুর রহমান, শাহে আলম, মমতাজ বেগম, জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বিকল্প ধারার মাহি বি চৌধুরী, বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার প্রমুখ। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু করমুক্ত ব্যক্তি আয়ের সীমা আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ধনীদের সম্পদের সার চার্জের পরিমাণ আড়াই থেকে ৩ কোটি করা হয়েছে, এটা কমিয়ে সোয়া দুই কোটি বহাল রাখা দরকার। বাজেটে ধনীদের সুযোগ দেওয়া হলেও দরিদ্রদের সুযোগ দিতে হবে। বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বলেন, খালেদা জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, তা জামিনযোগ্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নানা উছিলায় তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের নামে দায়েরকৃত গায়েবি মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। মোবাইল ফোনের কল চার্জের ওপর কর না আরোপের দাবিও জানান।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষা খাতে ৬১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা বাজেট বিএনপির শেষ বাজেটের পরিমাণের দশ গুণ। বিএনপি যদি অবকাঠামোর উন্নয়ন করত তাহলে অবকাঠামোর উন্নয়নের দিক থেকে আমরা এগিয়ে থাকতাম। আজ অবকাঠামোর উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ বেশি দিতে হতো না। ডা. দীপু মনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান কালো টাকা সাদা করেছিলেন। এখন বাজেটের টাকা তারেক রহমানের হাওয়া ভবন ও খোয়াব ভবনের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয় না বলেই দেশের সবক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, করের আওতা অবশ্যই সহনীয় মাত্রায় বাড়াতে হবে। অনেক মন্ত্রণালয় বাজেট বরাদ্দ কেন বাস্তবায়ন করতে পারছে না তা খতিয়ে দেখতে হবে। কে কী সমালোচনা করল তা দেখলে হবে না। বিচার বিভাগের জন্য বাজেট আরও বাড়াতে হবে। বিচারকের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। মামলাজট নিরসনে বিচারকের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে। হাই কোর্টে আরও ১০০ জন বিচারপতি নিয়োগ করা প্রয়োজন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জিডিপি, প্রবৃদ্ধি ও আয় বাড়লেও ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। বেকারত্বের হার কমছে না। শিক্ষিত বেকারের হার অনেক বেশি, ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। সময় এসেছে বেকার ভাতা চালুর চিন্তা করা। মাত্র ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেই প্রায় ১০ লাখ বেকারকে ভাতার আওতায় আনা সম্ভব হবে।

মাহি বি চৌধুরী বলেন, সারা দেশে নারীর ক্ষমতায়ন চোখে দেখার মতো। বিশাল একটি তরুণ প্রজন্ম উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর