সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে সন্তুষ্টি, বিএনপি-জাপায় ক্ষোভ

রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন

রংপুর প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগে সন্তুষ্টি, বিএনপি-জাপায় ক্ষোভ

রংপুর-৩ (সদর) আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর মধ্যে সন্তুষ্টি বিরাজ করলেও ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি। মনোনয়ন নিয়ে ঘরের আগুন নেভাতে পারছেন না বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারাও।

বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন পিপলস পার্টির রিটা রহমান। তার হাতে ধানের শীষের প্রতীক তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে ২০-দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবে মনোনয়ন নেন রিটা। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার পর অবশ্য গতকাল রিটা রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পিপলস পার্টি নিজেদের দলকে বিলুপ্ত করে বিএনপিতে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তকে বিএনপি অভিনন্দন জানিয়েছে। তবে এ ঘোষণার পর থেকে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নেতা-কর্মীরা বলছেন, আবারও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়ন দিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন। একজন অচেনা মহিলাকে মনোনয়ন দিয়ে শুধু ভুলই করল না বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতারা আবারও প্রমাণ করলেন, তারা নেতা তৈরি করতে অক্ষম। তার মনোনয়ন ঘিরে চলছে ক্ষোভ আর হতাশা। মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাওসার জামান বাবলা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সারা জীবনই বিএনপি ভুলের মাশুল দিচ্ছে। এবারও তাই করল। আমি রিটা রহমানকে ছাড় দেব না, স্বতন্ত্র হলেও নির্বাচন করব।  মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, দলে নেতা-কর্মীদের আবার বঞ্চিত করা হলো, এমন প্রার্থীকে দলের সাধারণ নেতা-কর্মী মেনে নেবে না।

এদিকে এরশাদপুত্র রাহগির আল মাহি সাদকে জাতীয় পার্টি প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাপায়। মহানগর জাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা রংপুরের জাপা কোনোভাবেই বহিরাগত প্রার্থীকে মেনে নেব না। আমরা স্থানীয়ভাবেই জাপার প্রার্থী দাঁড় করাব। কেননা এরশাদপুত্র সাদকে রংপুরের মানুষ চেনে না। এরশাদ জীবিত থাকা অবস্থায় কোনো দিন তাকে এনে রংপুরের মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেননি। তাই মহানগর জাপার সভাপতি মোস্তাফিজার রহমানের নির্দেশে জাপার ওই প্রার্থীকে আমরা প্রতিহত করব। জেলা জাপার একাধিক নেতা-কর্মী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এমনটাই জানিয়েছেন। জেলা ও মহানগর জাপার একাধিক নেতা জানিয়েছেন, প্রথমে মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরকে দল মনোনয়ন দিতে চেয়েছে। আমরা রংপুরের মানুষ তাকেই প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাই। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে মনোনয়ন দেওয়ার পর তৃণমূল আওয়ামী লীগে স্বস্তি বিরাজ করছে। তবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন। মহানগর যুবলীগের সভাপতি বাশার জানিয়েছেন, আশা করি শেষ পর্যন্ত দল প্রার্থীকে টিকিয়ে রাখবে, জাতীয় পার্টিকে আর কোনোভাবে ছাড় দেবে না। প্রার্থী প্রত্যাহার হলে রংপুরে আওয়ামী লীগের অস্বিত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে। এরশাদের অবর্তমানে রংপুর সদর আসনে জাপাকে আর ছাড় দিতে চাইছে না আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সাল থেকে রংপুর সদরের মানুষ এরশাদকে বিজয়ী করে আসছে।

খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের মাঝে এরশাদের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। তবে জোটগত নির্বাচনের কারণে গত তিনটি নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। ফলে প্রতিবারই এরশাদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু গত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনে ভরাডুবি এবং এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টি এ আসনটি আসলেই ধরে রাখতে পারবে কিনা এ প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠছে এখন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর