শনিবার, ৩০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

এখনো চালু হয়নি সেই আট আইসিইউ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উন্নত চিকিৎসায় আটটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) শয্যা ও আটটি ভেন্টিলেটর সরবরাহ করে সরকার। কিন্তু তৎকালীন সার্ভে কমিটির পরামর্শে এগুলো গ্রহণ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর এগুলো বাক্সবন্দীই ছিল। করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় বিষয়টি আলোচনায় আসলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গত ২৯ এপ্রিল উপকরণগুলো স্থাপনের অনুমতি দেয়। কিন্তু এক মাস পার হলেও সেগুলো এখনো চালু করা হয়নি। অভিযোগ আছে, স্বাস্থ্য উপকরণগুলো স্থাপনে এক মাস লাগার কথা নয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধীরে চল নীতি অনুসরণ করার কারণে অতি জরুরি উপকরণগুলো চালু করা হয়নি। অথচ প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী, প্রয়োজন হচ্ছে অতি জরুরি আইসিইউ। এমন স্পর্শকাতর সময়েও আটটি আইসিইউ ও আটটি ভেন্টিলেটর চালু করা সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক স্বাচিপের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘জেনারেল হাসপাতালে বাক্সবন্দী আটটি আইসিইউ শয্যা চালু করা গেলে এটি হতো বৃহত্তর চট্টগ্রামের বৃহত্তম আইসিইউ কেন্দ্র। অথচ  দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর এগুলো বাক্সবন্দী ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের এই করুণ সময়েও যদি এগুলো চালু করতে বিলম্ব করা হয়, তাহলে তা খুবই দুঃখজনক।’ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (চলতি দায়িত্বে) ডা. শফিকুল আলম বলেন, ‘এ হাসপাতালে বর্তমানে ১০টি আইসিইউ চালু আছে। এগুলোর সঙ্গে যে অক্সিজেন সরবরাহ লাইন আছে, সেখানে কিছুটা ত্রুটি আছে। তাই পুরো ১৮টি আইসিইউতে এক সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত শেষ করতে আইসিইউ বিষয়ে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ শেষ করে আইসিইউগুলো চালু করা হবে।’   

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪  অর্থবছরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আটটি আইসিইউ শয্যা, আটটি ভেন্টিলেটর ও একটি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর সরবরাহ করে। কিন্তু মালামালগুলো গ্রহণে হাসপাতাল কর্তৃক গঠিত সার্ভে কমিটি অসম্মতি প্রকাশ করে। পরে ঠিকাদার আদালতে মামলা করলে ঠিকাদারের পক্ষে রায় যায়। গত ১২ এপ্রিল এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ গত ২৯ এপ্রিল যন্ত্রপাতিগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তবে অনুমতির পর এক মাস পার হলেও সেগুলো এখনো চালু করা হয়নি। জানা যায়, প্রতিদিনই রুটিন করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে অতি সংকটাপন্ন অবস্থায় আইসিইউ শয্যার দরকার হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মাত্র ১০টি আইসিইউ শয্যা আছে। বাক্সবন্দী থাকা আটটি শয্যা চালু করা গেলে এ হাসপাতালে হতো ১৮টি আইসিইউ শয্যা। তখন এটি হতো বৃহত্তর চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালের বৃহত্তম আইসিইউ কেন্দ্র।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর