মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দুই বছর উন্নয়ন বঞ্চিত নগরবাসী

পাস হয়নি বিসিসির কোনো প্রকল্প

রাহাত খান, বরিশাল

দুই বছর উন্নয়ন বঞ্চিত নগরবাসী

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে উন্নয়ন বঞ্চনায় বরিশাল নগরবাসী। দীর্ঘ সময়ে নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন কিংবা বাস্তবায়ন করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। অর্থাভাবে প্রধান কিছু সড়ক সংস্কার ছাড়া নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারছে না। নগরীর বিশিষ্টজনরা বলছেন, সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সরকারের প্রতিনিধি। তার উন্নয়ন ব্যর্থতার দায়ভার সরকারের। ভাবমূর্তি রক্ষায় সরকার বরিশাল সিটির উন্নয়নে বিশেষ নজর দেবে বলে আশা করেন তারা। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) চতুর্থ মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেন আওয়ামী লীগের সাদিক আবদুল্লাহ। দায়িত্ব নেওয়ার পর নগরীর ৪৭টি খালের ১০৯.৬১ কিলোমিটার পুনঃখনন, তীর সংরক্ষণ, ফুটপাথ নির্মাণ, বিভিন্ন স্থানে ঘাটলা নির্মাণ, সৌন্দর্য বর্ধন, আলোকায়ন ও বৃক্ষ রোপণের জন্য ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি এবং নগরীর ভঙ্গুর ৪০৫ কিলোমিটার রাস্তাঘাট, কালভার্ট-ব্রিজ ও ১৪৯.৭১ কিলোমিটার ড্রেন-ফুটপাথ সংস্কার-উন্নয়নে ১ হাজার ১৮২ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। গত প্রায় দুই বছরেও এ দুটি প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। বিসিসির এক প্রকৌশলী জানান, রাস্তাঘাট, ড্রেন-ফুটপাথ, কালভার্ট-ব্রিজ সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ১ ৮২ কোটি টাকার প্রকল্পটি কাটছাঁট করে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে উপস্থাপিত হয়। একনেক ব্যয় কমিয়ে ফের ডিপিপি দেওয়ার জন্য প্রকল্পটি ফেরত পাঠায়। ওই প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে ৬৮৩ কোটি টাকার একটি সংশোধিত ডিপিপি গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশন থেকে অনুমোদিত হয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় যাবে। অপরদিকে নগরীর ৪৭টি খাল সংস্কার ও উন্নয়নের ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি একনেকে না পাঠিয়ে ব্যয় কমিয়ে ছোট ছোট ডিপিপি করে পাঠানোর জন্য গত জুলাই মাসে ফেরত পাঠায় প্লানিং কমিশন। প্রকল্পটি কাটছাঁট করে প্রায় অর্ধেক ডিপিপি করে ফের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই দুটি প্রকল্প আলোর মুখ না দেখলেও নগরীর বর্ধিত ও পুরনো এলাকা আলোকায়ন করার জন্য ২৭৬ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সিটি করপোরেশন। নগর ভবন সূত্র জানায়, গত ২ বছরে মন্ত্রণালয় থেকে ৪ দফায় থোক বরাদ্দ এসেছে মাত্র সাড়ে ১২ কোটি টাকা। রাজস্ব আয় এবং থোক বরাদ্দ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনও পরিশোধ করতে পারছে না তারা।  বরাদ্দ না পেলেও নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ১৫ কিলোমিটার প্রধান সড়ক সংস্কার এবং অলিগলি সড়ক মেরামত করেছে সিটি করপোরেশন। বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ্্ সাজেদা বলেন, সিটি নির্বাচনের সময় জনগণের আশা ছিল আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলে অনেক উন্নয়ন হবে। দুই বছরে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। সাদিক আবদুল্লাহ সরকারের প্রতিনিধি হওয়ায় তার উন্নয়ন ব্যর্থতা সরকারের ওপর বর্তায়। উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বরিশালের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, মন্ত্রণালয়ে আগে পাঠানো দুটিসহ তিনটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হলে বরিশাল নগরীর চেহারা পাল্টে যাবে।

এরপর আর উন্নয়ন করার জায়গা পাওয়া যাবে না। সরকারের উন্নয়ন সুবিধা নগরবাসীকে দেওয়ার জন্য প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদন পাবে বলে আশা করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর