মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

পাসপোর্ট আনতে গিয়ে মিলান কনস্যুলেট অফিসে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

জাহাঙ্গীর ইসলাম নামে ইতালি প্রবাসী এক যুবক মিলান কনসাল অফিসে পাসপোর্টের সংশোধন আবেদনের তথ্য জানতে গিয়ে কনস্যুলেট অফিসের সিন্ডিকেট কর্মচারী হাবিব-জাকিরের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোড় হাত করি, আমার পাসপোর্টটা দেন, আমি আমার মায়ের গোরস্থানটি দেখতে চাই।’ মিলান কনস্যুলেট অফিসে ২৩ জুন পাসপোর্টের কাজে গিয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক জাহাঙ্গীর ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও জানান, ২০১২ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের বাইরে। ২০১৭ সালে তিনি ইতালিতে রেসিডেন্টশিপ পান। এরপর থেকে পাসপোর্টের বয়স সংশোধনীর জন্য মিলান কনস্যুলেট অফিস বরাবর আবেদন করেন। তারপর থেকে পাঁচ বছর ধরেই তিনি ঘুরপাক খাচ্ছেন। পাসপোর্ট জটিলতার জন্য পাঁচ বছর আগেই ইতালিতে কাগজ পাওয়া জাহাঙ্গীর অসুস্থ মাকে দেখতে পারেননি, এখন মায়ের গোরস্থান দেখতে পর্যন্ত যেতে পারছেন না বাংলাদেশে। ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে থেকে একটি ই-মেইল বার্তা মিলান অফিসে ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে, সেই ই-মেইলের খোঁজ নিতেই সেদিন মিলান কনস্যুলেট অফিসে তিনি যান।  এ বিষয়ে কনসাল শামসুল আহসান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের পাসপোর্টে বয়স পরিবর্তন করতে হবে। এ সমস্যার সমাধান করা বর্তমান পাসপোর্টের নিয়ম-কানুনে সম্ভব নয়।’ জানা গেছে, এ অবস্থায় জাহাঙ্গীর উপায় না দেখে কনস্যুলেট অফিসের সিন্ডিকেট হোতা পরিচ্ছন্নকর্মী জাকিরের কাছে গিয়ে অনুনয়-বিনয় করে পায়ে ধরেন, তারপর জাকির তাকে পাঠান নিরাপত্তাকর্মী হাবিবের কাছে।

এ সময় তার কাছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে হাবিব ও জাকির! জাহাঙ্গীর এতো টাকা দিতে পারবে না বলার পরই শুরু হয় নোংরা ভাষায় গালাগালি, হুমকি দেওয়া হয় ইতালিয়ান পুলিশ কল দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হবে দূতাবাসের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দিয়ে।

কনসাল শামসুল আহসান এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি ছেলেটিকে বুঝিয়ে বলে আমার অফিস থেকে বের করে দেওয়ার পর আমাদের একজন কর্মী তাকে নিচে নিয়ে মেরেছেন- এমন অভিযোগ শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গেই সেই কর্মীকে ডেকে শাসন করেছি, জাহাঙ্গীরকে বুঝিয়ে বলেছি পাসপোর্টের বিষয়টি।’

জাহাঙ্গীর কাঁদতে কাঁদতে এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, নিরাপত্তা কর্মী হাবিব একপর্যায়ে হাতের কনুইয়ে ধরে বলে- ‘তুই যদি নিচে না যাস, ধাক্কা দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেব।’ তারপর ঠেলতে ঠেলতে নিচে নিয়ে এসে মুখের চোয়ালের মধ্যে মারে। জাহাঙ্গীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, আমারে মারধর করছে আমার আফসোস নাই, বিচার চাই না, আমার মায়ের গোরস্থানটা দেখতে চাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর