শিরোনাম
বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

অসহায়দের মাঝে পুলিশের খাবার বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অসহায়দের মাঝে পুলিশের খাবার বিতরণ

সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ চলছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত সবকিছুই বন্ধ। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষ কীভাবে জীবনযাপন করছে? কীভাবে কাটছে তাদের দিনগুলো? সামনের দিনগুলোই বা কাটবে কীভাবে? দিন যেভাবেই কাটুক না কেন, সবার আগে তাদের প্রয়োজন একমুঠো খাবার। বিশেষ করে তৈরি খাবার। রান্না করা সেই খাবার তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঘরবন্দী দুস্থ ও ছিন্নমূল অসহায় মানুষদের খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এসব খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

গতকালও চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে ৫ হাজার ছিন্নমূল, পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত, দিনমজুর, অসহায় নাগরিকের মধ্যে এসব খাবার বিতরণ করা হয়। রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকায় দুপুরে একযোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ খাবার বিতরণ করা হয়।

ডিএমপির কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের নির্দেশে ৫০টি থানা এলাকায় ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে প্রতিদিন দুপুরের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ফুটপাথ, বস্তি এলাকা ও রেললাইনের পাশে বসবাসকারী ছিন্নমূল ৫ হাজার মানুষের মধ্যে সবজি খিচুড়ি ও ডিম রান্না করে বিতরণ করা হয়। কোনো কোনো এলাকায় বিরানি এবং তেহারিও দেওয়া হয়েছে। পুলিশের গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে ভাসমান মানুষের কাছে এ খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গতকাল ডিএমপির বিভিন্ন থানা ও বিভাগের পক্ষ থেকে রাজধানীর বেইলি রোড, মগবাজার, পরীবাগ, সায়েন্স ল্যাব মোড়, শংকর, আবাহনী মাঠের পাশে, মিরপুরের ৬০ ফুট এলাকা, শ্যামপুর, জুরাইন, মুরাদপুর, দনিয়া, লালমাটিয়া, বছিলা, মোহাম্মাদিয়া হাউস বিল্ডিং এলাকা, দক্ষিণখান প্রাইমারি স্কুল, হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকা, কাজলা ব্রিজ, মাতুয়াইল, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, ফুলবাড়িয়া, নয়াবাজার, কাজী আলাউদ্দিন রোড, বংশাল থানার সামনে, ইত্তেফাক মোড়, টিএসসি চত্বর, শাহবাগ মোড়, পল্টন থানার সামনে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, বায়তুল মোকাররমের সামনে, পলাশীর মোড় এবং পেট্রোবাংলা এলাকায় রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। এসব এলাকায় যাদের খাবার দেওয়া হয়েছে, তাদের অধিকাংশই সমাজের খেটে খাওয়া দরিদ্র ও অসহায় মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছেন রিকশাচালক, দিনমজুর, ফলবিক্রেতা, ফুটপাথের ছিন্নমূল ও নৈশপ্রহরী।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন ৫ হাজার ছিন্নমূল, পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত, দিনমজুর ও অসহায় নাগরিকের মধ্যে খাবার বিতরণ করছে ডিএমপি। অন্যান্য দিনের মতো গতকালও অসংখ্য চেকপোস্ট স্থাপন, জোরালো টহল, অলিগলিতে নজরদারি, ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

পরীবাগ বিটিসিএলের সামনে ফুটপাথে থাকা এক বৃদ্ধা পুলিশের এ খাবার পেয়ে অনেকটা উদ্বেলিত হয়ে জানান, রাস্তায় মানুষজন নেই, তারাও ঠিকমতো খেতে পারছেন না, পুলিশের এই খাবার পেয়ে তারা খুব খুশি। ওহাব মিয়া নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য এক বেলার খাবার অনেক কিছু। এমন আয়োজনে আমরা খুশি। আমার মতো অসহায়দের যারা খাওয়াচ্ছেন, তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করি।’

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে তারা তাদের বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩০০ প্যাকেট খাবার বিতরণ করছেন। গতকালও বিটিসিএলের সামনে ৩০০ জনকে খাবার দিয়েছেন এবং রমনা থানা এলাকায় ঘুরে ঘুরে আরও ১২০ জনকে দেওয়া হয়েছে খাবার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অসহায়দের খাবার দিতে পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ নিজেদের বেতনের টাকা ও রেশন দিচ্ছেন। তা দিয়ে খাদ্যসামগ্রী কিনে খাবার রান্না করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর