রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পাহাড় কেটে পুলিশ সদস্যের বহুতল ভবন

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার ঐতিহ্যবাহী রূপসী পাহাড় কেটে ফৌজুল করিম নামে এক পুলিশ সদস্য নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন। পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ওই পুলিশ সদস্য প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে দিয়েছেন চাঁদাবাজির মামলা। দিয়ে চলেছেন আরও মামলার হুমকি। এরই মধ্যে সিএমপির কর্ণফুলী থানার ওই পুলিশ কনস্টেবলের পাহাড় কাটার বিষয়টি নজরে আসায় নোটিস দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী বলেন, ‘বায়েজিদে পুলিশ কনস্টেবল ফৌজুল করিমের পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়ায় নোটিস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানির তারিখ থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি। আগামী ৯ নভেম্বর ফের শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমতলার ঐতিহ্যবাহী রূপসী পাহাড় খুব বাজেভাবে কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে ভবন। এ পাহাড় কাটার ছবিও সংগ্রহ করেছে পরিবেশ অধিদফতর। শুনানি শেষে পাহাড় কাটার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘কনস্টেবল ফৌজুল করিম পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করছেন এ তথ্য শুনেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ জানা যায়, সিএমপির বায়েজিদ থানায় কর্মরত থাকাকালীন ফৌজুল করিম অপরাধীদের নিয়ে নিজস্ব চক্র গড়ে তোলেন। চক্রের সদস্যরা নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন চৌধুরী নগরে পাহাড় দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকার আমতলার ঐতিহ্যবাহী রূপসী পাহাড় দখলে নেন ফৌজুল করিম ও তার সহযোগীরা। দখলের পর ধীরে ধীরে কাটতে থাকেন পাহাড়টি। পাহাড়ের কিছু অংশ কাটার পর তাতে তৈরি শুরু করেছেন বহুতল ভবন।

এরই মধ্যে ওই ভবনের প্রথম তলার কাজ শেষ হয়েছে। ক্রমাগত পাহাড় কাটতে থাকায় পুলিশ সদস্য ফৌজুলের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয় কিছু সচেতন মানুষ।

তারা প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ফৌজুল তার কেয়ারটেকার মানিককে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করান। এ মামলা দায়ের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করে কথিত চাঁদাবাজির মামলার আসামিদের।

স্থানীয় জাকের হোসেন বলেন, ‘পাহাড় কাটার প্রতিবাদ করায় পুলিশ সদস্য ফৌজুল করিম তার কেয়ারটেকারের মাধ্যমে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে ৫০০ টাকার চাঁদাবাজি মামলা করান। ওই মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টা পর আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই পুলিশ সদস্য এখন হুমকি দিচ্ছেন আমাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা দেওয়ার।’

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফৌজুল করিমের মোবাইলে একাধিকবার কল ও এসএমএস করা হয়। কিন্তু সাড়া না দেওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর