রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে সাময়িকভাবে পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া হিমেল নিহতের ঘটনায় আহত রিমেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরিতে চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে পাথরবোঝাই ট্রাকচাপায় নিহত হন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবীব হিমেল। আহত হন একই অনুষদের শিক্ষার্থী ও হিমেলের সহপাঠী রায়হান রিমেল। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাঁচ ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণাধীন ভবনেও ভাঙচুর চালান তারা। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে হলে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ চলে যেতে দেখা যায়। হলগুলোর গেটে আর তাদের আসতে দেখা যায়নি।
শিক্ষক সমিতির নিন্দা : ট্রাকচাপায় হিমেলের মৃত্যুর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল সন্ধ্যায় সমিতির সভাপতি দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই-জাহান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক মর্মাহত।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসের যে পয়েন্টগুলো দিয়ে বহিরাগতদের প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে চারুকলা গেট, স্টেশন বাজার গেট ও বধ্যভূমি গেট। এ পয়েন্টগুলায় অস্থায়ী পুলিশ বক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত মাসের শুরু থেকে ক্যাম্পাসে একের পর এক ছিনতাই ঘটছে। এ ছাড়া বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ ও মাদক গ্রহণকালে আটকের ঘটনাও ঘটছে। ফলে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বহিরাগতের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ক্যাম্পাসে ট্রাকচাপায় আহত রায়হান রিমেলকে বৃহস্পতিবার রাতে ফলমূল নিয়ে দেখতে যান উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে ও উপাচার্যপত্নী অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিন। শহীদ মীর আবদুল কাইয়ুম আন্তর্জাতিক ডরমেটরিতে রিমেলকে দেখতে যান তাঁরা। এর আগে রাত ৮টার দিকে রিমেলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাবিতে নিয়ে আসেন ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর। রিমেলের সঙ্গে ছিলেন তার বাবা আবদুর রাজ্জাক ও বোন হিমা সুলতানা।
রিমেলের বাবা ও বোনের থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরিতে আলাদা রুম ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রিমেলের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়ে তার বাবার হাতে কিছু অর্থ তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তিনি বলেন, ‘রিমেল সুস্থ হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে। তার চিকিৎসাসহ সব খরচ আমরা বহন করব।’