বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

এমপিওভুক্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা হয়নি জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা পর্যায়ে আরও ২ হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) এমপিওভুক্ত করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধনকালে এমপিওভুক্তির এ ঘোষণা দেন। পরে দুপুর ১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বেড়ে গেলেও আপাতত স্কুল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা হয়নি বলে জানান মন্ত্রী।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজ রয়েছে ২ হাজার ৫১টি। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬৬৫টি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন এই এমপিওভুক্তি মিলে মোট এমপিও হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাঁড়াল ২৯ হাজার ১৬৪টিতে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পাসের হার ইত্যাদি বিবেচনা করে এই এমপিও ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে গত বছরের ১০ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন নেওয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ৪ হাজার ৬২১টি স্কুল কলেজ থেকে মোট ৪ হাজার ৭২৯টি আবেদন পাওয়া যায়। কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আবেদন করে ৩ হাজার ৯০৩টি প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ক্ষেত্রে ১৮টি এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২১৩টি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৫২ উপজেলা থেকে কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। আর মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ক্ষেত্রে ৩২টি উপজেলা থেকে একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। সিটি করপোরেশনভুক্ত ২২টি থানা থেকে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। আবেদন করেছে কিন্তু এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা উপজেলাগুলোতে অন্তত একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই করা হয়েছে। আঞ্চলিক অসামঞ্জস্যতা দূর করতে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ২৯টি, কারিগরি ও মাদরাসার ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এমপিওভুক্তির যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষায় পশ্চাৎপদ এলাকার ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তিতে আমলে নেওয়া হয়েছে। এই এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা চলতি অর্থবছর থেকে বেতন-ভাতা পাবেন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওর প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছে- এমন অভিযোগ থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে ১৫ দিনের মধ্যে সচিব বরাবর আপিল আবেদন করতে পারবেন। অন্যদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলে পরবর্তীতে তা প্রমাণিত দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে সর্বশেষ গত ২০১৯ সালে সারা দেশে ১ হাজার ৬৫১টি স্কুল-কলেজ এবং ৯৮৮টি কারিগরি ও মাদরাসা এমপিওভুক্ত করে সরকার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বন্যার কারণে পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, বন্যায় অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের নতুন বই দিতে হবে।

আমরা এখন পুরো নিরূপণ করছি যে, আমাদের কত পরীক্ষার্থীকে নতুন করে বই দিতে হবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বইও ছাপিয়ে ফেলব। তারপর পরীক্ষার্থীদের হাতে বইগুলো পৌঁছে দেব। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বন্যার কারণে পিছিয়ে যাওয়া এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

আপাতত স্কুল বন্ধের পরিকল্পনা নাই : গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বেড়ে গেলেও আপাতত স্কুল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা হয়নি বলে জানান দীপু মনি। তিনি বলেন, ১২ বছরের ওপরে সবার টিকা দেওয়া হয়েছে। ১২ বছরের নিচের টিকাটা যদি আমরা দেওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলতে পারি, তাহলে হয়তো সেটার আর প্রয়োজন হবে না। আমরা এই মুহূর্তে স্কুল বন্ধের কথা ভাবছি না।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর