সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বাসের কাগজপত্র চুরি করে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের কাগজপত্র চুরি করে মালিকের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- রাকিব মিয়া ওরফে তুফান, মো. শুকুর আলী, মো. হৃদয় হোসেন ও মো. শামিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত সিমসহ দুটি মোবাইল সেট এবং বিভিন্ন বাসের চোরাই রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ট্যাক্স টোকেনের মূল কপি উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন। তিনি বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা শহরের মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা পরিবহন, প্রজাপতি পরিবহন এবং রবরব পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাসে যাত্রী সেজে উঠে বাসের ব্লু-বুক ও রেজিস্ট্রেশন সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র চুরি করে। এরপর তারা গাড়ির মালিক, ম্যানেজার ও চালকদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে চোরাই প্রতিটি গাড়ির কাগজের জন্য ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চক্রটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চালকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। কাগজপত্র ছাড়া রাস্তায় বাস চালাতে না পারায় মালিকরা চাঁদার পরিমাণ কমিয়ে প্রতি গাড়ির কাগজের জন্য ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে দিতেন। টাকা পাওয়ার পর তারা কিছু গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেয়। আটকে রাখা বাকি কাগজপত্র ফেরত দেওয়ার শর্তে মিরপুর লিংক, খাজাবাবা ও বিকল্প পরিবহন বাসের মালিকদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করে।

 ট্রাফিকের মামলার ভয়ে তারা বাধ্য হন চাঁদা দিতে। অনেক পরিবহন মালিক মাসিক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় চক্রের হোতা তুফান নাম পরিচয় দিয়ে মালিকদের হুমকি দেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ির মালিকরা ঢাকার বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। দুই থেকে আড়াই বছরে থানায় দেড় শতাধিক জিডি হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে মোবাইল চুরি করে সে মোবাইল দিয়ে ফোন করে বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করত। বাসের মালিকরা চক্রটির কাছে একরকম জিম্মি হয়ে পড়েন। ২০২০ সালে তুফান বাসের কাগজ প্রথম চুরি করা শুরু করেন। প্রায় দেড় হাজার বাসের কাগজ চুরি করে চাঁদা আদায় করেন। গত ২৮ দিনে ৫৬টি সিম বদলেছেন তুফান। গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহ আলী থানায় মামলা করা হয়েছে। চক্রে আরও অন্তত পাঁচজন সদস্য আছেন। তাদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান সিআইডি কর্মকর্তা ইমাম হোসেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর