বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে ২ কোটি মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে ২ কোটি মানুষ

 

‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। লবণাক্ততা বৃদ্ধির প্রবণতা ৬ শতাংশ বাড়বে। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকার আয়তন প্রায় ৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার বৃদ্ধি পাবে এবং ২৬ মিলিয়ন মানুষ সুপেয় পানিবঞ্চিত হবে।’

গতকাল খুলনায় জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক কর্মশালায় এসব তথ্য     জানানো হয়। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের  অভিঘাত মোকাবিলায় সঠিক নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালা আয়োজন করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম। এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এ কারণে জলবায়ু তহবিল ব্যবহারে খুলনার উপকূলীয় এলাকাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত পানি প্রবেশ বন্ধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। জলবায়ু তহবিলের অর্থের ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করতে হবে। একই সঙ্গে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সঠিক ও তথ্যনির্ভর সংবাদ পরিবেশনে সহায়তা করতে হবে। কর্মশালায় খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সহকারী তথ্য অফিসার মো. আতিকুর রহমান মুফতি, লজিক প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ কো-অর্ডিনেটর শেখ ফয়সাল শাহ, লজিক প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট ফাইন্যন্স কো-অর্ডিনেটর মো. আসাদুল হকসহ খুলনায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় আরও বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশে আরও ৬ শতাংশ এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে যাবে। কৃষি জমি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। লবণাক্ততার শিকার হবে আরও ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ।

এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ শহর এলাকায় ভিড় করছে। গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই খুলনায় সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে আমন ও শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। দুর্যোগের সময় বেড়িবাঁধ ভাঙলে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে স্বেচ্ছাশ্রমে তারা বাঁধ নির্মাণ করেন। আবার সেই বাঁধ নির্মাণ বাবদ ব্যয় দেখিয়ে সুবিধাভোগীরা অর্থ ভাগাভাগি করেন। কর্মশালায় স্থানীয় সমস্যা চিহ্নিত করে ইউনিয়ন পর্যায়ে বাজেট ও কর্মপরিকল্পনা তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে বাজেটে বরাদ্দ নয়, প্রয়োজনের ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে জলবায়ুর ক্ষতি মোকাবিলায় নতুন কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ, সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান, কাজের ধরন সংস্কার, জবাবদিহিতা ও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর