বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথ

নকশা চূড়ান্ত অর্থের জন্য অপেক্ষা

তিনটি জংশন ছাড়াও হবে ১৬টি স্টেশন

রাহাত খান, বরিশাল

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল ও পায়রা সমুদ্রবন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত হয়েছে নকশা ও ডিজাইন। এই রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। এখন অর্থ সংস্থানের চেষ্টা চলছে। অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা পেলে রেলপথ নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (প্রকৌশল) মামুনুল ইসলাম। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করেছেন বরিশালের সামাজিক আন্দোলনের নেতারা।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙ্গা থেকে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুসারে একই বছরের অক্টোবরে ভাঙ্গা-বরিশাল-পায়রা-কুয়াকাটা রেলপথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন ও টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরির লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। ২০২০ সালের মার্চের প্রস্তাবিত রেলপথ, স্টেশন ও জংশন স্থাপনের সমীক্ষাসহ বিস্তারিত নকশা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে জুলাইয়ে সমীক্ষা শেষ করে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরই ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে ২০৩০ সালে সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ভাঙ্গা থেকে থেকে বরিশাল ও পায়রা সমুদ্রবন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এ পথের মধ্যে ভাঙ্গা, বরিশাল ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে নির্মাণ করা হবে তিনটি জংশন। ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১৯টি সম্ভাব্য স্টেশন হলো বড়ইতলা, টেকেরহাট, মাদারীপুর, কালকিনি, গৌরনদী, উজিরপুর, বরিশাল বিমানবন্দর, দপদপিয়া, বাকেরগঞ্জ, বদরপুর, পটুয়াখালী, কুকুয়া, আমতলী, পায়রা বন্দর, লেমুপাড়া ও কুয়াকাটা। বরিশালের জংশন ও স্টেশনগুলো হবে স্থানীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইলিশ আকৃতির। এ পথের বিভিন্ন নদীর ওপর নির্মিত হবে বড় ১২টি রেলসেতু। ছোট ছোট কালভার্ট হবে প্রায় ৪০০। স্টেশন ও জংশনগুলোতে ক্রসিং লাইনের জন্য নির্মিত হবে ৩৬৭ ট্রাক কিলোমিটার। দ্রুতগতির রেল যোগাযোগের জন্য ব্রডগেজ রেলপথ নির্মিত হবে ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রুটে। প্রস্তাবিত এই রেলপথটি বরিশাল শহর এড়িয়ে নির্মাণ করার দাবি উঠেছে সর্বমহলে। তাদের দাবি, আজকের প্রেক্ষাপটে শহরের একপাশ দিয়ে রেলপথ নির্মিত হলে আগামী এক দশকে ওই সব এলাকায় ঘনবসতি গড়ে উঠবে। তখন আবার শহরের বাইরে দিয়ে রেলপথ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথ সমীক্ষা প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (যান্ত্রিক) মামুনুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে যতটা সম্ভব ঘনবসিতপূর্ণ এলাকা ও কৃষিজমি এড়িয়ে রেলপথ নির্মাণের। বিষয়টি মাথায় রেখেই সমীক্ষা চূড়ান্ত করেছেন তারা। তিনি বলেন, সমীক্ষার সময় ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। তবে জ্বালানি তেল এবং অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৬০ হাজার কোটি টাকা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর