বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

১৭ বছর পর সচল হচ্ছে বিটিভির চার কর্মকর্তা হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চার দশকেরও বেশি সময় আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) চার কর্মকর্তাকে হত্যা মামলায় থাকা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে ১৭ বছর ধরে স্থগিত থাকা এ মামলা চলতে আর বাধা নেই। বিটিভির নিহত চার কর্মকর্তা হলেন তৎকালীন উপমহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) মনিরুল আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ এফ এম সিদ্দিক, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আকমল খান ও চিত্রগ্রাহক ফিরোজ কাইয়ুম চৌধুরী। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতু, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শামীম খান ও কাজী সামসুন নাহার। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা বলেন, আসামিদের মধ্যে আয়নুজ্জামান ২০০৪ সালে মারা যান। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আরও তিনজন মারা গেছেন। দুই আসামি পলাতক।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর বিটিভিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরে দাবিদাওয়া নিয়ে বিটিভির তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আন্দোলন চলার সময় ৭ নভেম্বর ওই চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এভাবে যখন তাদের আটকে রাখা হয়, তখন তাদের পরিবারের লোকেরা গেলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাদের গাড়িতে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

১৯৭৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিটিভি ভবনের পেছনের ঝিল থেকে তিনটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। পরীক্ষার পর কঙ্কালগুলো মনিরুল, সিদ্দিক ও আকমলের বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে কাইয়ুমকে আর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ১৯৭৮ সালের জানুয়ারিতে কিছুই পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। ওই রিপোর্ট আদালত গ্রহণ করেন। এরপর মামলাটি বন্ধ হয়ে যায়।

পরে ১৯৯৬ সালে সরকার পরিবর্তনের পর হত্যার শিকার একজনের পরিবারের সদস্য ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবার সিআইডিতে পাঠায়। সিআইডি আদালতে আবেদন করে পুনঃ তদন্তের আবেদন জানায়। ২০০২ সালের ৭ আগস্ট মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। পরের বছর ১৬ আগস্ট ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আদালতের অনুমতি নিয়ে পুনঃ তদন্ত করে চার্জশিট দেয় সিআইডি। চার্জশিটে চারজনকে আসামি করা হয়। সে সময় কর্মরত সামরিক ও বেসামরিক যারা ছিলেন তাদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে ২০০৫ সালের ২৬ মে হাই কোর্ট মামলার বিচার স্থগিতের আদেশ দেয়। ফলে মামলাটি স্থগিত ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর