বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বরিশাল বিআরটিএ কার্যালয়ে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি

পাঁচ আনসারকে প্রত্যাহার করতে চিঠি

রাহাত খান, বরিশাল

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) বরিশাল কার্যালয়ে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করে আর্থিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে বিআরটিএ বরিশাল কার্যালয়কে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে একটি চক্র। অফিসের আনসার সদস্যরা দালালির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় তাদের প্রত্যাহার করতে প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করেছেন জেলা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক। যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু, চালকের সহকারীর লাইসেন্স প্রদান, গাড়ির ফিটনেস যাচাই, মালিকানা পরিবর্তন, রুট পারমিট প্রদান ও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানসহ আট ধরনের সেবা দিয়ে থাকে বিআরটিএ কার্যালয়। বরিশাল জেলা কার্যালয়ে একজন সহকারী পরিচালকসহ ১২ জন কর্মচারীর পদে কর্মরত আছেন ১১ জন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট। ভুক্তভোগীরা জানান, সেবা প্রার্থীরা কোনো কাজে বিআরটিএ কার্যালয়ে গেলে নানা অজুহাতে তাদের ভুলভ্রান্তি ধরে ফিরিয়ে দেয় কর্মচারীরা। দালাল ধরলে আর কোনো সমস্যা হয় না। তারা জানান, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এখান থেকে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার নজির কম। বিভিন্ন অঙ্কে দালালদের সঙ্গে চুক্তি করলেই নির্দিষ্ট সময়ের পর মিলে যায় কাক্সিক্ষত লাইসেন্স।  সেবাপ্রত্যাশীরা জানায়, বিআরটিএ কার্যালয়ে কোনো কাজে গেলে আনসার সদস্যরা আগবাড়িয়ে তাদের কবজা করে ফেলে। নানা ধরনের হয়রানির ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ফায়দা আদায় করেন তারা।

 আনসার সদস্যদের দালালিতে জড়িয়ে পড়ায় বিব্রত জেলা বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। গত ১৩ অক্টোবর বরিশাল জেলা কার্যালয় থেকে সেখানে নিযুক্ত পাঁচজন আনসার সদস্যকে প্রত্যাহারের জন্য প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, বরিশাল জেলা বিআরটিএ কার্যালয়ে রেকর্ডপত্রবিহীন দায়িত্ব পালন করছে পাঁচ আনসার সদস্য। তাদের জন্য জেলা কার্যালয়ে বেতন-ভাতাদি বরাদ্দ থাকলে তারা বেতন নেন না। কোথা থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয় তাও জেলা কার্যালয় জানে না। পাঁচজন আনসারের মধ্যে একজন বিভাগীয় কার্যালয়ে উপপরিচালক কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করে। একজন জেলা কার্যালয়ে বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করে। অন্য তিনজন দালালিতে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে সরকারি পরিচালকের এই কার্যালয়ের বদনাম হয় এবং ভাবমূর্তি সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় দালিলিক চিঠিপত্র ছাড়া বিআরটিএ কার্যালয়ে নিযুক্ত আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করা হলে এই অফিসের ভাবমূর্তি রক্ষা হবে এবং সরকারের আর্থিক সাশ্রয় হবে।

এ বিষয়ে বিআরটিএ বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহে আলম আনসার সদস্যদের দালালিতে জড়িয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এই কার্যালয়ে এখন আর আনসার দরকার নেই। তাদের কারণে অফিসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল। বিষয়টি প্রধান কার্যালয়ে জানিয়ে তাদের প্রত্যাহার করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর