শিরোনাম
সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ

মামলা আতঙ্কে রাজশাহী বিএনপি

পুলিশের চার মামলায় আসামি ৬৫০ নেতা-কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির গণসমাবেশের আগে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সমাবেশের আগেই রাজশাহীর চার থানায় বিএনপি নেতা-কর্মীরদের নামে মামলা হয়েছে। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ৫০ জনকে। আর অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা সাড়ে ৬০০। এদিকে শহর এবং উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নেতা-কর্মীরা। রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর নামে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে গতকাল মামলা হয়েছে। গভীর রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় মামলাটি করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান খন্দকার। মামলার আসামি হিসেবে গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব (৪৯)-সহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ আছে। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে গোপনে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে বিদ্যুৎ অফিস ও সরকারি স্থাপনায় নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে ককটেলও উদ্ধার করা হয়। তাই মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গোদাগাড়ীর পর শনিবার বাগমারায় বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে বাগমারায় বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করা হয়। শুক্রবার বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তবে মামলার আসামিদের দাবি, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ভীতি সৃষ্টির জন্য পুলিশ এই গায়েবি মামলা করেছে। আর পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছয়টি অবিস্ফোরিত ককটেল, চারটি বাঁশের লাঠি, ইটের টুকরা ও চারটি পানির বোতল জব্দ করেছে। এরপর মামলা করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, আসামিদের কেউ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মামলার এক দিন পর এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন তারা। রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মীরা যাতে না আসতে পারেন, এ জন্য গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এরপরও সমাবেশ সফল হবে। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, তারা প্রথমে গোডাউন মোড়ে সমাবেশের চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে নাজিরপুরে গিয়ে সমাবেশ করেছেন। পুলিশ প্রকৃত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করেছে। এটা কোনো গায়েবি মামলা নয়। মামলায় ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামানসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ জানতে পারে যে নাশকতা সৃষ্টির জন্য ভবানীগঞ্জ পৌরসভার নাজিরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জমায়েত হয়েছেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেখানে অভিযানে যান তিনি। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। সেখান থেকে পুলিশ ককটেল, লাঠি ও ইটের টুকরা উদ্ধার করে। তারা স্থানীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সরকারি স্থাপনায় হামলা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছিলেন। প্রাথমিকভাবে সাতজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকি আসামিদের পরিচয় সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর