সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
মায়ের পরিবারের দাবি আত্মহত্যা

আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ, মা আটক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ নগরীর দেওভোগ এলাকায় ছেলে রেদোয়ান আহমেদ রাজু (১৪)-কে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে মা লিপি বেগমকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৩ নভেম্বর রাতে ছেলে রাজুকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে গত শনিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।  নিহত রাজু শহরের দেওভোগ বেপারীপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। রাজু শহরের একটি স্ক্রিন প্রিন্ট কারখানার শ্রমিক ছিল। তবে রাজুর মায়ের পরিবারের দাবি, রাজু নিজেই তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে রাজুর বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ লিপি বেগমকে গ্রেফতার করে।

আটক রাজুর মা লিপি বেগমের বোন মিনু বেগম গণমাধ্যমে দাবি করে জানান, রাজু আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে। ঘটনার দিন রাতে রাজু দিয়াশলাই ও কেরোসিন তেল নিয়ে রুমে ঢোকে। পরে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশপাশের লোকজনসহ আমরা জড়ো হয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আত্মহত্যার কারণ দাবি করে তিনি আরও জানান, ‘রাজুর স্ক্রিন প্রিন্ট কারখানা থেকে সম্প্রতি চাকরি চলে যাওয়ায় তার মা লিপি বকাঝকা করেন। এরপরই সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। মিনু বেগমের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজু চিকিৎসকের কাছে বলে গেছে, সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।

এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় ও প্রতিবেশীরা জানান, বিয়ের পর থেকেই রাজুর বাবা ও মায়ের মধ্যে কলহ চলছিল। চার বছর আগে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে রাজু ও তার বড় ভাই মায়ের সঙ্গে থাকত। ঘটনার দিন রাতে প্রতিবেশীরা লিপির বাসা থেকে আগুনের ধোঁয়া ও কান্নার শব্দ শুনতে পায়। আগুন লেগেছে ভেবে প্রতিবেশীরা দৌড়ে ঘরে ঢুকতেই দেখেন রাজু দগ্ধ অবস্থায় কাতরাচ্ছে।

মামলার বাদী রাজুর বাবা এ ঘটনার জন্য মাকে দায়ী করে বলেন, ‘ছেলের চাকরির বয়স হয়নি। তবুও তাকে দিয়ে চাকরি করিয়েছে। ছেলের চাকরি চলে যাওয়ায় নির্যাতন চালাত। স্থানীয় অনেকেই বলেছে রাজুকে হাত-পা বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তার মা। ছেলের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ  সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, এ ঘটনায় মা লিপি বেগমকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রবিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা মামলার তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।

তিনি আরও জানান, আটকের পর মা লিপি বেগম কোনো কথাই বলছেন না। ছেলেকে কি তিনি হত্যা করেছেন নাকি ছেলে আত্মহত্যা করেছে কোনো বিষয়ে তিনি মুখ খুলছেন না। আমরা তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড আবেদন করেছি। রিমান্ড মঞ্জুর হলে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানাতে পারব এটি হত্যা না আত্মহত্যা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর