সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুর আওয়ামী লীগে নতুন হিসাব

বুঝেশুনে মনোনয়ন না দিলে বড় বিপত্তি ঘটতে পারে সংসদ নির্বাচনে

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুর আওয়ামী লীগে নতুন হিসাব

সদ্য সমাপ্ত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামানত হারানোর পর নতুন করে হিসাব শুরু হয়েছে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে। চলতি বছর ডিসেম্বরে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হবে, নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে এ নিয়ে চলছে সর্বত্র আলোচনা। কারণ বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলার ২২টি আসনের মধ্যে অধিকাংশ আসনই জাতীয় পার্টি পাবে এমনটা আশা করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এখানে আওয়ামী লীগ বুঝেশুনে মনোনয়ন না দিলে বড় ধরনের বিপত্তি ঘটতে পারে এমনটা আশঙ্কা করছেন অনেকে। আসন ভাগাভাগি হবে, নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে এ নিয়ে   দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলায় ২২টির মধ্যে    জাতীয় পার্টির দখলে রয়েছে ৬টি আসন। আসন্ন নির্বাচনে কী হবে এ নিয়ে জাপা-আওয়ামী লীগে চলছে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ।

রংপুর জেলায় ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে চারটি এবং জাতীয় পার্টির কাছে রয়েছে দুটি। এর মধ্যে রংপুর সদর আসনে প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ এমপি হয়েছেন। অনেকে মনে করছেন এই আসনটি কৌশলের কারণে জাপাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনের এমপি জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব দল থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মসিউর রহমান রাঙ্গা। এই আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। জাতীয় পার্টির দ্বন্দ্ব নিরসন না হলে ওই আসনে জাতীয় পার্টি রাঙ্গার পরিবর্তে অন্য প্রার্থী দেবে। সে ক্ষেত্রে রাঙ্গা কী করবেন এ নিয়েও চলছে আলোচনা। রংপুর-৬ পীরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এই আসনটি জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে পারে এমনটা মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া রংপুর-৪ আসনের বর্তমান এমপি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিগত নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে আওয়ামী লীগকে। রংপুর-৫ আসনের এমপি এইচ এন আশিকুর রহমান। তবে এই আসনটি ছাড় দিতে নারাজ জাতীয় পার্টি। নীলফামারীতে চার আসনের মধ্যে তিনটিই আওয়ামী লীগের দখলে। একটি জাতীয় পার্টির কাছে। আওয়ামী লীগের দখলে থাকা ওই তিনটি আসনে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা মনোনয়নের দাবিতে অনড় রয়েছেন। লালমনিরহাটে তিনটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আওয়ামী লীগের দখলে। লালমনিরহাট-১ আসন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে।

গাইবান্ধায় পাঁচটি সংসদীয় আসন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে সদ্য নির্বাচন হওয়া ফুলছড়িসহ চারটি আসন। একটি আসন জাতীয় পার্টির। এই পাঁচটি আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলায় চারটি আসনের একটি জাতীয় পার্টির কাছে রয়েছে। আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে তিনটি। এবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কুড়িগ্রামের একটি আসনও ছাড় দিতে চাইছেন না। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সমীকরণ অন্য রকম হবে।

রংপুর জেলায় জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজি আবদুর রাজ্জাক বলেন, রংপুরে জাতীয় পার্টি আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২২টি আসনেই জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাসেম বলেন, আওয়ামী লীগ আগামীতে যে কোনো নির্বাচনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর