শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

যে কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা বাড়ছে

স্বাস্থ্যসেবায় নিপোর্টের গবেষণাপত্র উপস্থাপন খুলনায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

‘দুর্যোগে গ্রাম থেকে শহরে আসা হতদরিদ্র মানুষ, উপজাতি, রোহিঙ্গা ও বিহারি জনগোষ্ঠীকে এখনো শতভাগ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা যায়নি। প্রায় ৭০ শতাংশ উপজাতি শারীরিক জটিলতা ও ৫৪.৫ শতাংশ উদ্বাস্তু নারীরা স্বামী-শাশুড়ি পছন্দ না করায় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন না। এ ছাড়া পরিবার-পরিকল্পনা পদ্ধতি সরঞ্জামের অভাব, সামাজিক ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীর প্রচারণা কাজে সীমাবদ্ধতায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।’ গতকাল খুলনায় ‘উদ্বাস্তু ও অভ্যন্তরীণ অভিযোজনে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর পরিবার-পরিকল্পনা কর্মসূচি’ বিষয়ক গবেষণাপত্রে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এতে কমিউনিটিভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য জাতীয় জনসংখ্যা নীতি গ্রহণ করার কথা বলা হয়। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) আয়োজনে গবেষণাপত্র উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক মো. শাহজাহান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিপোর্টের পরিচালক (গবেষণা) ও লাইন ডিরেক্টর (টের্নিং রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মোহাম্মদ আহছানুল আলম।

গবেষক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে ৯৮৬ জন গ্রাম থেকে শহরে বসবাসের জন্য আসা দরিদ্র মানুষ, ৯৩৬ জন উপজাতি, ৮০২ জন রোহিঙ্গা ও ২০০ জন বিহারী জনগোষ্ঠীর লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেন তথ্য সংগ্রহকারীরা। পরে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যাচাই করে সুপারিশ আকারে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।

তিনি বলেন, মূলত এই চার ধরনের মানুষকে নানা সংকটের কারণে শতভাগ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা যায়নি। এর মধ্যে ৪.৯ শতাংশ গ্রাম থেকে শহরে বসবাসের জন্য আসা দরিদ্র মানুষ, ৬.৬ শতাংশ বিহারি ও ১০ শতাংশ রোহিঙ্গা জন্মনিয়ন্ত্রণ সরঞ্জামের অভাবের কথা জানিয়েছেন। ৭০ শতাংশ উপজাতি জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি খেলে মাথা ঘোরা, ঘুম না হওয়া, পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো শারীরিক সমস্যার কথা বলেছেন। বস্তি এলাকায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা না থাকা ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির কথাও জানিয়েছেন অনেকে।

নিপোর্টের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ভালো হলেই সচেতনতা বাড়বে ও রোগের প্রকোপ কমবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হলে ২১০০ সালে দেশে জনসংখ্যা হবে ১৮ কোটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি হলে ওই সময় জনসংখ্যা হবে ২৪ কোটি। তবে জন্মহার ২-এর নিচে নামলে জনসংখ্যা আরও কমতে থাকবে।     

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর