শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গার তীরে পৌষমেলা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

বুড়িগঙ্গার তীরে পৌষমেলা

রূপসী বাংলার সঙ্গে পৌষের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শুষ্ক আর রুক্ষতার এই ঋতুতে আবহমান বাংলার প্রতিটি ঘর সেজে ওঠে পিঠার রস-রূপ-গন্ধে, স্বাদে ও বৈচিত্র্যে। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে শীতের পিঠা পাঠানো চিরায়ত বাংলার রেওয়াজ। তবে ইটকাঠের যান্ত্রিক এই নগরীতে পৌষ, শীত আর পিঠাপুলি এখন রূপকথার গল্পের মতোই মনে হয়। নগরীতে শীতের আমেজ ও পৌষের তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিন দিনের পৌষমেলা। পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে গতকাল বুড়িগঙ্গা তীরের ওয়াইজঘাটের বুলবুল ললিতকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। মেলা উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ঝুনা চৌধুরী, বাফার সভাপতি হাসানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. বিশ্বজিৎ রায়।

প্রধান অতিথি কে এম খালিদ বলেন, ধনী, গরিব, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পৌষমেলা বাঙালির একটি অসাম্প্রদায়িক ও সার্বজনীন উৎসব। এর মাধ্যমে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে সেতুবন্ধ রচিত হয়।

এ মেলায় প্রথম দিনের আসরে দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ক্রান্তি, বহ্নিশিখা, মহিরুহ ও বাফা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কথা আবৃত্তিচর্চা কেন্দ্র আর দলীয় নৃত্য বাফা, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায় ও জিনিয়া নৃত্যকলা একাডেমি। বাউল গান পরিবেশন করেন সমীর বাউল ও শাহনাজ বাউল। একক গান পরিবেশন করেন ড. তাপসী ঘোষ, সমর বড়ুয়া, মোহনা দাস, শান্তা সরকার, খোন্দকার খায়রুজ্জামান কাইউম। একক আবৃত্তি করেন আজহারুল হক আজাদ ও অনন্যা লাবণী পুতুল। বিশেষ আয়োজন হিসেবে ছিল মানিকগঞ্জের দলের মহুয়া পালা।

কাল শনিবার শেষ হবে তিন দিনের এই পৌষমেলা।

শিল্পকলায় ১৪তম যাত্রা উৎসব : যাত্রাশিল্প উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়ন ও যাত্রাদল নিবন্ধনের লক্ষ্যে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হয়েছে যাত্রা উৎসব। এটি উৎসবের ১৪তম আসর। গতকাল একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে শুরু হয় ছয় দিনের এই উৎসব। এতে প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৩৬টি যাত্রাদলের যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হবে।

প্রথম দিনের আসরে অংশ নেয় গোপালগঞ্জের মনিষা অপেরা, জামালপুরের নিউ বাংলার মুখ নাট্য সংস্থা, শেরপুরের আয়নাল অপেরা, রাজন অপেরা। আজ মঞ্চায়ন হবে টাঙ্গাইলের বংশাই অপেরা, জামালপুরের নিউ শিলা নাট্য সংস্থা, নিউ রহিম নাট্য সংস্থা, যশোরের বঙ্গবাণী অপেরা, তুষার অপেরা, ঢাকার জাগ্রত নাট্য গোষ্ঠী।

নাট্য, সাহিত্য ও যাত্রাব্যক্তিত্বসহ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা যাত্রাপালা মূল্যায়ন করবেন। তাদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে যাত্রাদলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হবে। পালা মূল্যায়নকারী সম্মানীত সদস্যরা হলেন- খায়রুজ্জাহান মিতু, তাপস সরকার, মিলন কান্তি দে, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, মামুনুর রশীদ, রামেন্দু মজুমদার, ড. ইসরাফিল শাহীন, ড. আমিনুর রহমান সুলতান, ড. তপন বাগচী, সাইদুর রহমান লিপন, ইউসুফ হাসান অর্ক, লাকী ইনাম, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, কামাল উদ্দিন কবির, গোলাম সারোয়ার, প্রবীর মিত্র, মার্জিয়া আক্তার, অরুণা বিশ্বাস, রহমত উল্লাহ, ইউসুফ হাসান অর্ক, তামান্না হক সিগমা। এ ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ইতোমধ্যে ১৩টি যাত্রা উৎসবের মাধ্যমে ১৫৫টি যাত্রাদলকে নিবন্ধন দিয়েছে। এ ছাড়া ৯টি যাত্রাদলকে বিভিন্ন অভিযোগে নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।

১৭ জানুয়ারি শেষ হবে এবারের যাত্রা উৎসব। সব যাত্রাপালা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর