রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে আন্দোলনের পথে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা

চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে জ্বালানি তেলের সংকট আরও প্রকট হয়েছে। চাহিদার অর্ধেক জ্বালানিও সরবরাহ করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন কোম্পানিগুলো। রেলের ওয়াগন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্বালানি তেল না আসায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতদিন সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভৈরব থেকে জ্বালানি এনে পাম্পগুলো সচল রেখেছিলেন। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার তারা সংকট নিরসনে আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন। আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে বিপণন কোম্পানি থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ ও ২২ জানুয়ারি থেকে তেল বিক্রি বন্ধ করে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। গতকাল সভা করে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ব্যবসায়ীরা জ্বালানি তেল সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য সিলেটে বন্ধ থাকা রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলোও চালুর দাবি জানিয়েছেন। জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সিলেট বিভাগে ১১৪টি পাম্পের মাধ্যমে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হয়। বিভাগে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার ডিজেল এবং ৩ লাখ লিটার পেট্রল ও অকটেনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ওয়াগন সংকটের কারণে গড়ে প্রতিদিন ডিজেল, অকটেন ও পেট্রল মিলিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে ৫-৬ লাখ লিটার। সপ্তাহে যেখানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী একটি লরি আসার কথা সেখানে আসছে মাত্র দুই-তিন দিন। যে কারণে দিন দিন জ্বালানি তেলের সংকট বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন আহমদ জানান, সিলেট বিভাগে জ্বালানি তেলের যে চাহিদা রয়েছে তার অর্ধেকও সরবরাহ নেই। এতদিন  ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনায় সিলেটের ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে ভৈরব থেকে জ্বালানি তেল এনে বিক্রি করছিলেন। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাম্প মালিকদের অব্যাহতভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

সিলেটের বিপণন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপো তেলশূন্য পড়ে থাকছে দিনকে দিন। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় সিলেটের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে পাওয়া কনডেনসেড শোধন করে সিলেটেই উৎপাদন হতো জ্বালানি তেল। কিন্তু সিলেটের শোধনাগারগুলোতে উৎপাদিত তেলের মান ভালো নয়, এই অজুহাতে ২০২১ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব শোধনাগার। পরে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের মুখে কেবল রশিদপুরের শোধনাগারটি চালু হলেও বাকিগুলো এখনো বন্ধ রয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটের শোধনাগারগুলোতে যে মানের তেল উৎপাদিত হতো, এখন তার চেয়ে নিম্নমানের তেল চট্টগ্রাম থেকে আসছে। রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো বন্ধ করে এখন সিলেট থেকে কনডেনসেড চট্টগ্রামে পাঠিয়ে বেসরকারি শোধনাগারে তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমনি সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে সিলেটে জ্বালানি তেলের সংকটও বাড়ছে। এ অবস্থায় সিলেটের জ্বালানি ব্যবসায়ীদের পক্ষে পাম্প চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তারা আন্দোলনে নামছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর