মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
গবেষণা প্রতিবেদন

সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তার কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের মানুষের বড় অংশ স্বাস্থ্যসেবার জন্য জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর নির্ভরশীল। এ স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকালে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এসব কারণেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম।

গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিয়ে গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ‘বাংলাদেশের জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে চিকিৎসকদের চ্যালঞ্জসমূহ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় প্রধান গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান জানান, দেশের নয়টি জেলা হাসপাতাল ও ১৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্ভে চেকলিস্টের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোয় সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সাতজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন, সুপারিনটেনডেন্ট, মেডিকেল অফিসার, আবাসিক মেডিকেল অফিসারের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে গবেষণাটি সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের শতভাগ জেলা হাসপাতালে রক্ত পরিসঞ্চালন সেবাটি থাকলেও ৪১.২ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবাটি পাওয়া যায়নি। জেলা হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যথাক্রমে ৮৮.৯ ও ৪১.২ শতাংশ ক্ষেত্রে এক্স-রে পরিষেবা পাওয়া গেছে। ৮৮.৯ শতাংশ জেলা হাসপাতাল ও ৭৬.৫ শতাংশ উপজেলা কমপ্লেক্সে ইসিজি পরিষেবা পাওয়া গেছে। একইভাবে ৪৪.৪ শতাংশ জেলা হাসপাতালে ও ১১.৮ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলট্রাসনোগ্রাম সুবিধা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৭৭.৮ শতাংশ জেলা হাসপাতালে এবং ৬৪.৭ শতাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা রোগীর জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এটা সত্য। হাসপাতালে রাজনৈতিক চাপ থাকলে এমন সামাজিক অবস্থা রাতারাতি পরিবর্তন হবে না।

তবে রোগীরা যেন হাসপাতালে এসে ভালো চিকিৎসা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। জাহিদ মালিক বলেন, অনেক হাসপাতালে রোগী বেশি হওয়ার কারণে ডাক্তারদের কাজের চাপ বেশি থাকে। যেখানে ২০ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেখানে যদি ১০ জন বা আটজন থাকেন, তাহলে চাপ তো বাড়বেই। আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সব স্তরের শূন্যপদ পূরণ করা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, দক্ষতা অনুযায়ী চিকিৎসকদের যথাযথ পোস্টিং নিশ্চিত করতে হবে। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর