সাকারমাউথ ক্যাটফিশ নিষিদ্ধ করে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। স্থানীয়ভাবে এটি সাকার মাছ হিসেবে পরিচিত। গতকাল এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মৃণাল কান্তি দে গত ১১ জানুয়ারি এই মাছ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপনটি জারি করেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে কেউ এই সাকার মাছ আমদানি, চাষ, পরিবহন, বিক্রয়, সরবরাহ ও সংরক্ষণ করতে পারবে না। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় সাকার মাছ নিষিদ্ধ করতে প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯০৫ এর ১৮ নম্বর ধারা সংশোধন প্রস্তাব প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে। এ ব্যাপারে কারও কোনো আপত্তি বা পরামর্শ থাকলে দুই মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কাছে জানাতে বলা হয়।
যে কারণে নিষিদ্ধ সাকার : সাকার মাছের ইংরেজি নাম ঝঁপশবৎসড়ঁঃয ঈধঃভরংয বা ঈড়সসড়হ চষবপড়। এই মাছ দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছে মৎস্য অধিদফতর। তাদের এক প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, সাকার মাছ আশির দশকে ব্রাজিল থেকে অননুমোদিতভাবে বাহারি মাছ হিসেবে প্রথম বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে সাকার মাছ নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুরে চাষ করা মাছের সঙ্গে ব্যাপকভাবে ধরা পড়ছে, যা জীববৈচিত্র্য তথা দেশীয় প্রজাতির মাছের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। সাকার মাছের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে প্রচারপত্রে আরও বলা হয়, যে কোনো জলজ পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে এবং দ্রুত বংশবৃদ্ধির কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা করে এই মাছ।দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম ও রেণু খেয়ে বংশবিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, সর্বোপরি জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে সাকার। দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছসহ জলজ পোকামাকড়, শেওলা, ছোট শামুকজাতীয় প্রাণী খেয়ে সাকার মাছ পরিবেশের সহনশীল খাদ্যশৃঙ্খল নষ্ট করে। জলাশয় পাড়ের ক্ষেত্রবিশেষ পাঁচ ফুট পর্যন্ত গর্ত করে পাড়ের ক্ষতি করে এবং জলাশয়ের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা কমায়।