মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সামাজিক বনায়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যবদল

দুই দশকে আয় ৪৭ কোটি উপকারভোগী ১৩ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সামাজিক বনায়নে জড়িয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন রাজশাহী অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ১৩ হাজার ৬৫১ জন উপকারভোগী ২০০০ সালের পর থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পেয়েছেন ৫ কোটি ৯৮ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৯ টাকা। কাঠ বিক্রির ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ পেয়েছেন তারা। সূত্র বলছে, গত ২২ বছরে ৪৭ কোটি ৫১ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আয় হয়েছে সামাজিক বনাঞ্চল থেকে। উপকারভোগী ছাড়াও ২০ শতাংশ হিসাবে ভূমির মালিকরা পেয়েছেন ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ৮১০ টাকা। ৫ শতাংশ হারে ইউনিয়ন পরিষদের অংশ ২ কোটি ৫১ লাখ ৪১ হাজার ২৯০ টাকা। গাছ বিক্রির ১০ শতাংশ অর্থ জমা পড়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। বাকি ১০ শতাংশ ফের বনায়নে বিনিয়োগ করেছে বন বিভাগ। বন দেখাশোনা করে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১২ লাখ ৪২ হাজার ৩০০ টাকা পেয়েছেন নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ফজলুর রহমান। ২০১৩ সালে এক অনুষ্ঠানে তার হাতে লভ্যাংশের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। একই উপজেলার কাশেম মুন্সি ১২ লাখ ১৪ হাজার ৯৯০ টাকার চেক পেয়েছেন ২০২২ সালে। বন বিভাগ বলছে, ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২১ জন উপকারভোগী প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে লভ্যাংশের চেক পেয়েছেন। ২০১৫ সালে পেয়েছেন দুজন। ২০২২ সালে একসঙ্গে চেক পেয়েছেন ১০ জন। তারা সবাই নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। বন বিভাগের হিসাবে- এই অঞ্চলের সামাজিক বনায়নে ৫৯ হাজার ২০৫ জন যুক্ত।

এত বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক বনায়নে যুক্ত করা মোটেও সহজ ছিল না বলে জানিয়েছেন সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্। তিনি বলেন, প্রথম দিকে মানুষজন ততটা আগ্রহী ছিলেন না। নানানভাবে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভূমিহীন, দরিদ্র, বিধবা ও দুর্দশাগ্রস্ত গ্রামীণ জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সামাজিক বনায়ন শুরু হয়। এতে সৃষ্টি হয় বনজ সম্পদ। মরুময়তা থেকে রক্ষা পায় বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রকৃতি। এ ছাড়া আর্থিক ভিত শক্তিশালী হয়েছে উপকারভোগীদের।

রাজশাহী বন বিভাগ সূত্র বলছে, ১৯৮১-৮২ অর্থবছরে কমিউনিটি ফরেস্ট্রি প্রকল্পের মাধ্যমে বৃহত্তর রাজশাহীর রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলায় সামাজিক বনায়ন শুরু হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বন বিভাগ। দারিদ্র্য বিমোচন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ছিল এসব প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্প শুরু হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে শুরু হয় বরেন্দ্র অঞ্চলের পরিবেশ সুরক্ষা প্রকল্প।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর