২০১২ সালের দিকে রংপুর বিভাগের বধ্যভূমিগুলো সংস্কারের জন্য বরাদ্দ এসেছিল। কাজ শুরু করার পরপরই সেই বরাদ্দ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে বরাদ্দ না আসায় অর্থাভাবে রংপুর বিভাগের দুই শতাধিক বধ্যভূমির সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজ থমকে আছে। এসব বধ্যভূমি সংস্কারের ফাইল ১১ বছরের বেশি সময় ধরে লাল ফিতায় বন্দি রয়েছে। সংরক্ষণের অভাবে এসব বধ্যভূমি এখন অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংস হতে চলেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় এরই মধ্যে অনেকগুলো বধ্যভূমির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। তবে গণপূর্ত বিভাগ বলছে, খুব দ্রুত বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া সরকারি জায়গায় বধ্যভূমি সংস্কারে কোনো জটিলতা না থাকলেও ব্যক্তি মালিকায় যেসব স্থানে বধ্যভূমি রয়েছে সেগুলো অধিগ্রহণের জটিলতায় সংস্কার কাজ আটকে আছে।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে পাকহানাদার বাহিনীর গণহত্যার স্থান তথা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সরকার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর বিভাগের আট জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমির জরিপ চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিত করা হয়। এগুলো মধ্যে সরকার মাত্র ৫০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এ জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে স্থান ও জমি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। সরকারি জমিতে থাকা বধ্যভূমি সংস্কারে কোনো সমস্যা না থাকলেও অনেক বধ্যভূমি রয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে। সেসব জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। রংপুরে পাঁচটি বধ্যভূমি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তিনটি বধ্যভূমি ব্যক্তি মালিকানায় থাকায় সেসব জমি এখন পর্যন্ত অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সংস্কারের সিদ্ধান্ত শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। তথ্যানুসারে রংপুর বিভাগে সর্বমোট ৩৯৫টি গণহত্যা হয়েছে। এ গণহত্যার স্থানগুলোতে বা তার আশপাশে গণকবর ও বধ্যভূমি গড়ে উঠেছিল। রংপুর গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খন্দকার জানান, বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ না আসায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।