শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীতে সাশ্রয়ী মূল্যে বসুন্ধরার ২৩ পণ্য বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে সাশ্রয়ী মূল্যে বসুন্ধরার ২৩ পণ্য বিক্রি

পবিত্র রমজান উপলক্ষে বসুন্ধরা গ্রুপ রাজধানীতে সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রমজান উপলক্ষে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। ‘বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য’- এ স্লোগান নিয়ে রাজধানীর দুটি স্পটে বসুন্ধরা গ্রুপের পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। একটি হলো বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে এবং অন্যটি হলো কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে। স্পট দুটিতে থাকা ট্রাক থেকে ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে তেল, আটা, ময়দা, নুডলসসহ ২৩টি পণ্য নিতে পারছেন। গতকাল সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে সাশ্রয়ী মূল্যের এ ট্রাকসেল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার ও বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উদ্বোধন শেষে জতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ডিজি বলেন, এবারের রমজান আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম আগে বেড়েছিল, যা রমজানের সময় কিছুটা স্বস্তির জায়গায় ফিরেছে। এবার রমজানে ব্যবসায়ীরা আমাদের সাহায্য করছেন।

তিনি আরও বলেন, আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় রমজানে নিত্যপণ্য ছাড়ে বিক্রি করা হয়। আমরাও এ বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর থেকে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করেছিলাম, তারাও যেন রমজানের সময় ট্রাকসেলের মাধ্যমে তাদের পণ্যগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের ট্রাকসেল কার্যক্রম শুরু করেছে। এজন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সারা দেশে আট বিভাগে ১০টি ট্রাকের মাধ্যমে ১৯-২০টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে (মিলগেট দামে) বিক্রি শুরু করেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তির বাজার করতে পারবে। এ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। এ ছাড়া গতকাল সকালে রাজধানীর সচিবালয়ের সামনে বসুন্ধরা গ্রুপের ট্রাকসেল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দাউদুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব মিরাজুল ইসলাম উকিল, সহকারী নিয়ন্ত্রক রিফাত হাসান, বসুন্ধরা গ্রুপের এজিএম (সেলস) কাজী মনিরুজ্জামান মনি, ম্যানেজার (ব্র্যান্ড) আহমেদুজ্জামান, ম্যানেজার করপোরেট (সেলস) আবদুল্লাহ ফয়সাল। অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন বলেন, আমরা দেশের সব বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানিয়েছিলাম রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে অবদান রাখার জন্য। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। আজ তার উদ্বোধন হলো। সেজন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর মাধ্যমে আশা করছি আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় একটা ইতিবাচক ধারা তৈরি করতে পারব এবং বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা মূলত চিনি, তেল, আটা বিক্রির কথা বলেছিলাম। তবে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। আমরা আশা করছি বসুন্ধরা গ্রুপ ঢাকায় আরও কিছু স্পটে এ ধরনের উদ্যোগ নেবে। এ বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজার (ব্র্যান্ড) আহমেদুজ্জামান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আমাদের এ উদ্যোগে পাশে থাকার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় জনগণের পাশে আছে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারে জনগণকে সুবিধা দিতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট নয়টি স্পটে সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রাকসেল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমাদের এ কার্যক্রম পুরো রমজান জুড়ে চলবে। পরে জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছর যেন এ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি, আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের ট্রাক থেকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে আটা, ময়দা, তেল, নুডলস, সেমাই, হলুদ-মরিচের গুঁড়া, বিভিন্ন মসলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি হবে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি তেল, ৫ কেজি আটা, ময়দাসহ অন্যান্য প্যাকেটজাত পণ্য দুটি করে নিতে পারবেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের সাশ্রয়ী মূল্যের ট্রাক থেকে ক্রেতারা ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৭৯ টাকা, পাম তেল ১৩২ টাকা, আটা ১ কেজি ৬০ টাকা, ময়দা ১ কেজি ৭৫ টাকা, সুজি ৪৪ টাকা, সেমাই ২০০ গ্রামের ১ প্যাকেট ৩২ টাকা, লাচ্ছা সেমাই ২০০ গ্রাম ৪২ টাকা, মুড়ি ২৫০ গ্রাম ৩০ টাকা, মুড়ি ৫০০ গ্রাম ৫২ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডলস ৪ প্যাক ৬০ টাকা, ৮ প্যাক ১১৫ টাকা, স্টিক নুডলস ১২৫ গ্রাম ১৬ টাকা, সি-শেল নুডলস ২০০ গ্রাম ৩২ টাকা, ম্যাকারলি ওয়েস্টার ২০০ গ্রাম ৩০ টাকা, হালিম মিক্স ২০০ গ্রাম ৫০ টাকা, মুরগির মসলা ১০০ গ্রাম ৬২ টাকা, বিরিয়ানির মসলা ৪০ গ্রাম ৫০ টাকা, গরুর মাংসের মসলা ১০০ গ্রাম ৭০ টাকা, হলুদ গুঁড়া ১০০ গ্রাম ৪৫ টাকা, মরিচ ১০০ গ্রাম ৬০ টাকা, ধনিয়া ১০০ গ্রাম ৩২ টাকা, জিরা ১০০ গ্রাম ৮০ টাকা, ম্যাজিক পটেটো ১৭ গ্রাম ৯ টাকায় নিতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর