চট্টগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে চলছে শীতের আমেজ। সকালে কুয়াশাভেজা ঘাস শীতের আগমন জানান দিচ্ছে। কিন্তু এ শীতেও দাপট দেখাচ্ছে বর্ষা মৌসুমের রোগ খ্যাত ডেঙ্গু। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এক দিনেই মারা গেছেন তিনজন এবং আক্রান্ত ৬৪ জন। অভিযোগ আছে, এবার শীত মৌসুমে এডিস মশার দাপট থাকলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বিকার। তারা মশা নিধনে রুটিন কাজ হিসেবে ওষুধ ছিটানোর কথা বললেও তা দৃশ্যমান নয়; কেবল দেখা যায় আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানের পর স্প্রেম্যানদের আর দেখা যায় না। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার এক দিনেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন আবুল কাসেম (৬৫), তহিদুল আলম (৬৫) ও তৌফিক ওমর (১৭)। তা ছাড়া ওই দিন নতুন করে আক্রান্ত হন ৬৪ জন। অন্যদিকে প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৮৫ জন নতুন আক্রান্ত হচ্ছেন। গত বুধবার আক্রান্ত হন ৬৪ জন, মঙ্গলবার ও সোমবার ৮৬ জন করে। বর্ষার পর শীত মৌসুম এলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমেনি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বর্ষার পর শীত আসছে। তবু থেমে নেই ডেঙ্গু আক্রান্ত। অতীতের চেয়ে এ বছর ডেঙ্গুর চরিত্র ভিন্ন বলেই মনে হচ্ছে। তাই বর্ষার পর দুই মাস পার হলেও ডেঙ্গু এখনো দাপট দেখাচ্ছে। বিষয়টি গবেষণার। বর্ষা না থাকলেও সবাইকে অবশ্যই সতর্ক ও সচেতন হয়ে চলতে হবে। ঘুমাতে হবে মশারি টাঙিয়ে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, ডেঙ্গু শীতপ্রধান রোগ না হলেও এবার শীতে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। এটি ডেঙ্গুর ধরন পরিবর্তনের প্রমাণ। বৈশি^কভাবেও ডেঙ্গুর ধরন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে, এর কারণ কী এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন।
জানা যায়, চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত হন ১২ হাজার ৯১৩ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে ৮ হাজার ৯৭০ এবং ১৫ উপজেলায় ৩ হাজার ৮৭৯ জন। চলতি বছর মোট মারা যান ৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৯, মহিলা ২৯ ও শিশু ৩১। চট্টগ্রামে ২০২২ সালে আক্রান্ত হন ৫ হাজার ৪৪৫ জন, মারা যান ৪১ জন। ২০২১ সালে আক্রান্ত হন ২৭১ জন, মারা যান পাঁচজন।