দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির চলছে চট্টগ্রামের তৃণমূলের মাঠ গোছানোর কাজ। এরই অংশ হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃণমূলের কমিটিগুলো ঘোষণা করতে যাচ্ছে দলটি। তৃণমূলের কমিটি গঠনের পর পরই ঘোষণা করা হবে জেলা ও উপজেলা কমিটি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক মীর হেলাল বলেন, ‘এখন আমরা সংগঠন গোছানোর কাজই করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃণমূলের কমিটিগুলো গঠন করা হবে। অতঃপর কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা এবং উপজেলা কমিটিগুলো গঠন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিএনপি’তে স্থান দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমূল পরিবর্তন আসে চট্টগ্রামের বিএনপির রাজনীতিতে। দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি ও তার অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে ফিরে আসে উদ্দীপনা। কিন্তু বিএনপির সুখের ঘরে হানা দিয়েছে ‘অস্বস্তি’। এস আলমের ডেরা থেকে বিলাসবহুল গাড়ি বের করতে সহযোগিতার অভিযোগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির পুরো কমিটিই বাতিল করা হয়েছে। অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দক্ষিণের শীর্ষ তিন নেতাকে। বর্তমানে অভিভাবকহীনভাবে চলছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যক্রম। সদ্য ঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর কমিটিও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পরই দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় চার নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। অপর দিকে গৃহবিবাদ নিয়ে শান্তিতে নেই উত্তর জেলা বিএনপিও। অন্তর্কোন্দলের জের ধরে রাউজান, মীরসরাইয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অনুসারীদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের কোন্দলের চরমে ওঠা উত্তর জেলা বিএনপির অবস্থা টালমাটাল। কিন্তু এত কিছুর পরও থেমে নেই চট্টগ্রাম বিএনপির তিন ইউনিটের কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি তৃণমূলে নিজেদের অবস্থান সুসংগঠিত করতে চাইছে। তাই ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুতি করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা ও উপজেলা কমিটি ঘোষণা করতে চায় দলটি। এ নিয়ে কথা হয় বিএনপির এক সিনিয়র নেতার সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিএনপির মাঠ গোছানোর প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণার পর জেলা এবং উপজেলা কমিটিগুলোতে হাত দেওয়া হবে।’