খুলনা নগরীতে ধীরগতির ড্রেনেজ নির্মাণকাজ বুমেরাং হয়ে দেখা দিয়েছে। জনভোগান্তির পাশাপাশি নির্মাণকাজের জন্য ড্রেনে পানি আটকে রাখায় বদ্ধ পানিতে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। সেই সঙ্গে বস্তির ঘিঞ্জি পরিবেশে ডোবা-নালা ও ড্রেনে মশা জন্মাচ্ছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, বিশেষ অভিযানে নগরীর দোলখোলা, রায়পাড়া, বাস্তুহারা এলাকা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে খ্যামা বস্তি, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার বস্তিতে মশার উৎপত্তি স্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসে সচেতনতা বৃদ্ধি, অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে কেসিসি। তবে মশা নিধনে ছিটানো ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক নেতারা। পাশাপাশি কেসিসির বর্জ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি সমন্বয়হীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে খুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ১৭২ জন। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২০ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মশক নিধনের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলামও।
সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম জানান, ঘরে-বাইরে, অফিসে সব জায়গায় মশার উপদ্রব। দিনেও কয়েল জ্বালাতে হচ্ছে। কেসিসি মশক নিধনে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয় করলেও মশার কামড় থেকে রেহাই মিলছে না।
নাগরিক সংগঠন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার জানান, মাঠপর্যায়ে মশককর্মীদের কাজের তদারকি না থাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। বর্জ্যব্যবস্থাপনা শাখার বিরুদ্ধে ওষুধ চুরির অভিযোগও রয়েছে।
আউটসোর্সিং নিয়োগে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে সহকারী বর্জ্যব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার এ্যানীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই খাতের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমানকে উদ্দেশ্যমূলক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার স্থলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এলপিআরে থাকা সাবেক বর্জ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজকে।
এদিকে ২৭ নভেম্বর কেসিসি প্রশাসক বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, মশক নিধনে কেসিসির কর্মকা নগরবাসীকে হতাশ করেছে। ফগার মেশিন দিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াকু লীর মধ্যে শত শত মশার ওড়াউড়ি প্রমাণ করে তা মশক নিধনে অকার্যকর। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সততার ঘাটতি রয়েছে। কেসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম বলেন, মশক নিধনে ওষুধের কার্যকরী মান খারাপ থাকায় তা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন দুই শিফটে কর্মীরা মশা দমনে ওষুধ স্প্রে করছেন।