জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রাজশাহীর বাজার ভরপুর মৌসুমি ফল আম ও লিচুতে। প্রতি বছর এখানকার আম ঢাকায় পাঠাতে চালু হয়ে থাকে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনটিতে স্বল্প খরচে ঢাকায় আম নেওয়া যায়। কিন্তু এবার ট্রেনটি চলবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহের কারণে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়নি বলছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। গত কয়েক বছর ট্রেনটি চালিয়ে বিপুল টাকা লোকসানের বিষয়টিও এবার বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে চাষি ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ থাকলে ট্রেনটি চালুর কথা ভাবছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এ ট্রেন নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতা খুব ভালো না। তাই এবার এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। চাষি ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ থাকলে ট্রেন চালু হতে পারে।’ জানা গেছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। এতে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। তবে ট্রেন পরিচালনার খরচ এর চেয়েও বেশি। গত বছর রাজশাহী থেকে ঢাকায় প্রতি কেজি আম পরিবহনে ভাড়া পড়েছিল ১ টাকা ৪৩ পয়সা। এত কম টাকায় আম পরিবহন করা গেলেও বাগান থেকে স্টেশনে নেওয়া এবং স্টেশন থেকে আবার বাজারে নিয়ে যাওয়া বিড়ম্বনা হিসেবেই দেখেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ মেট্রিক টন। পরিপক্ব আমের বাজারজাত নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন এবারও ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ ঘোষণা করেছে। ১৫ মে গুটি জাতের আম নামানো শুরু হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, ‘এবার আমের উৎপাদন গতবারের তুলনায় বেশি। চাষিরা লাভবান হবেন বলে আমরা আশা করছি।’