টেলিগ্রামে পর্নোগ্রাফি-সংক্রান্ত গ্রুপ, অ্যাডমিন ও অর্থ লেনদেনকারী হিসেবে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। আদালত সূত্র জানায়, ‘টেলিগ্রামে হাজারো তরুণীর নগ্ন ভিডিও বিক্রি’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। ওই আদেশে ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারকে একজন চৌকশ ও দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারক আদেশে তদন্তকালে উদ্ঘাটিত তথ্য ও ঘটনার আলোকে নিয়মিত মামলা দায়েরের এবং তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রতি ১৫ দিন অন্তর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। উভয় সংবাদদাতাকে তদন্তকালে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন আদালত।
গত শনিবার একটি দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘টেলিগ্রামে হাজারো তরুণীর নগ্ন ভিডিও বিক্রি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদটি বিবিসি বাংলাসহ পত্রিকা, অনলাইন ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়। সংবাদটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার ও আলোচনা হয়। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ও ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১) (সি) ধারায় ওই আদালতের নজরে আসায় এবং জনসাধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আদালত থেকে এ আদেশ এলো।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুক ও টেলিগ্রাম ঘাঁটাঘাঁটি করে বেশ কিছু গ্রুপের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘এক্সপোজ ভাইরাল ভিডিও’। গ্রুপটিতে প্রায় ২০ হাজার সদস্য। ‘দেশি ভাইরাল ভিডিও’ নামের আরেকটি পেজে ১০ হাজার সদস্য। ‘এক্সপোজ অরিজিনাল’ গ্রুপে ১০ হাজার, ‘ব্রেইনটস অফিসিয়াল ডেমো’র ৩৮ হাজার সদস্য। এসব গ্রুপে হাজার হাজার তরুণী-যুবতীর আপত্তিকর ছবি-ভিডিওর ডেমো দেওয়া হয়।
স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কম বয়সি নারীদের ভিডিও থাকে। ফেসবুক থেকেই লিঙ্ক দেওয়া হয় টেলিগ্রাম চ্যানেলের। লিঙ্কে ক্লিক করলে দেশি নগ্ন-অশ্লীল ভিডিও আসে। তবে আংশিক ভিডিও দিয়ে ফাঁদ পাতা হয়। বাড়ানো হয় আগ্রহ। পুরো ভিডিও দেখতে হলে দিতে হয় টাকা। অগ্রিম টাকা দিলেই কেবল পুরো ভিডিও লিঙ্ক দেওয়া হয়। টাকা দিয়ে এসব ভিডিও কিনে নগ্ন উল্লাসে মেতে উঠছে যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সি ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে সর্বনাশ হচ্ছে তরুণ-তরুণীদের।