প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে যে চিকিৎসক প্রথম সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, সেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। তবে তার মৃত্যুর খবর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল দেশটির গণমাধ্যম।
এই মহামারী বিস্তারের আগে সতর্ক করেছিলেন ডা. লি ওয়েনলিয়াং। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকেই মরতে হয়েছে এই রোগে। উহান হাসপাতাল তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
উহান কেন্দ্রীয় হাসপাতালে কাজ করার সময় তিনি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। গত ৩০ ডিসেম্বর সহকর্মী চিকিৎসকদের তিনি এ বিষয়ে প্রথম সতর্ক করেন। পরে মিথ্যা গুজব না ছড়াতে পুলিশ তাকে হুশিয়ার করে দেয়।
কিন্তু তার মৃত্যু নিয়ে সেখানে পরস্পরবিরোধী খবর প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির পিপলস ডেইলির খবরে দাবি করা হয়, তিনি শুক্রবার স্থানীয় সময় ২টা ৫৮ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত ৬৩৬ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ১৬১ জন। বৃহস্পতিবার নতুন করে ৭৩ জন মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর নিয়ে চীনা গণমাধ্যম ছড়ায় বিভ্রান্তি। বিবিসি বলছে, চীনের গ্লোবাল টাইমস প্রথমে লির মৃত্যুর খবর দেয়, পরে তা প্রত্যাহার করে বলে ওই চিকিৎসক সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
চীনের পিপলস ডেইলিও লির মৃত্যুর খবর জানিয়ে টুইট করেছিল।
কমিউনিস্ট শাসিত চীন প্রথমে তার মুখ বন্ধ করে দিতে চাইলেও ভাইরাসটির সর্বত্র বিস্তার ঘটানোয় বীর হিসেবে তার তারিফ করা হচ্ছে।
উহানে গত ডিসেম্বরে সাতটি ঘটনা ধরা পড়ে এই চিকিৎসকের কাছে। তিনি এটিকে সার্সের মতোই বলে মনে করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর উইচ্যাটের একটি গ্রুপে ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে তিনি সবাইকে প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তখন তিনি যেটি জানতেন না, তা হলো– যে রোগটি ধরা পড়েছে, সেটি সম্পূর্ণ নতুন একটি করোনাভাইরাস। চার দিন পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা তার কাছে ছুটে যান। একটি মুচলেকায় তার সই নেন, যেখানে তার বিরুদ্ধে সামাজিক শৃঙ্খলায় মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টিকারী মিথ্যা মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়।
কেবল তিনিই নন, গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আরও সাতজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে বলে তখন পুলিশ জানিয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/কালাম