মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। এখনও নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। মরতে-মরতে বেঁচে গেছেন। ঠিক এমন কথাই জানালেন লন্ডনে বসবাসকারী ভারতীয় নারী রিয়া লাখানি। লন্ডনে প্রাণঘাতি ভাইরাসকরোনায় ৭ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন খোদ দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
উত্তর-পশ্চিম লন্ডনে নিজের বাড়ি থেকেই যুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করলেন রিয়া। তিনি বলেন, 'নিঃশ্বাস নেয়া যে এক্কেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু আমাকে এখন মনে করতে হয় কীভাবে নিঃশ্বাস নিতে হয়, আর কীভাবে ত্যাগ করতে হয়!'
নিজের বাড়িতে এখনও আইসোলেশনেই রয়েছেন রিয়া। এখনও অবধি স্বামীর সঙ্গে দেখা অবধি করতে পারেন না। ভাই-বোন, বাবা-মা নিজের কাছের মানুষগুলো কী করছেন, কী খাচ্ছেন- তার কিছুই জানতে পারেন না তিনি।
একটি অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন লাখানি। আর সেখানেই তার শরীরে COVID-19 এর উপস্থিতি ধরা পড়ে। লন্ডনে একজন সেলস এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি করেন তিনি।
অপারেশনের পর হঠাৎই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। জ্বরও আসতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ডাক্তাররা সেই সময়ে মনে করছিলেন, অস্ত্রোপচারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গগুলোও জোরদার হচ্ছিল। দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগেন ডাক্তাররা। আর এরপরই তার লালারসের পরীক্ষা করা হয়।
রিপোর্টে আসে লাখানির করোনা পজিটিভ। তড়িঘড়ি করে তার চিকিৎসা শুরু হয়। গোটা ওয়ার্ড ফাঁকা করে দেয়া হয়। দিন যতই এগুচ্ছিল, ততই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন রিয়া। আর তারপরই লন্ডনে করোনার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকেই সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি।
কঠিন যন্ত্রণার দিনগুলোর কথা মনে করে রিয়া বলেন, 'নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য মাঝরাতে উঠে পড়তাম। বারবার মনে হতো, ভোর হয়তো আমার আর দেখা হবে না! একমাত্র চিকিৎসক আর নার্সদের নিরলস চেষ্টায় আমি এই যাত্রায় আবার বেঁচে ফিরেছি। ওরাই হলেন আসল হিরো।' সূত্র: এই সময়
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত