চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং করোনা সন্দেহে ৭০ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে চারজন মারা গেছেন। মারা যাওয়া চারজনই জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।
পক্ষান্তরে করোনাভাইরাস সন্দেহজনক ভর্তি হওয়া পাঁচজন রোগী মারা যান। তারাও ফুসফুসজনিত সমস্যা, জ্বরের সঙ্গে শাসকষ্ট, উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর এবং শাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। এর সঙ্গে কারও কারও ছিল গলা ব্যথা, কাশি ও ডায়রিয়া।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে গত ১৯ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ভর্তি হওয়া রোগীদের নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয় বলে জানা যায়।
জানা যায়, গত ১৯ মার্চ থেকে জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং করোনা সন্দেহে মোট ৭০ জন রোগী (পুরুষ ৫৩ ও নারী ১৭) ভর্তি হয়। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় চারজনের এবং করোনাভাইরাসের সন্দেহে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যু হয় পাঁচজনের।
শনিবার পর্যন্ত এ হাসপাতালে মোট ২৮ রোগী আইসোলশন ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত ২৪ জন (পুরুষ ২০ ও নারী ৪ জন) এবং করোনা সন্দেহেজনক আছে চারজন। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১ জন, এর মধ্যে আক্রান্ত সাতজন ও সন্দেহজনক ২৪ জন। রেফারকৃত রোগী ছিল সাতজন।
জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, ‘এ হাসপাতালে আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক ভর্তি হওয়া প্রায় সব রোগীর মধ্যে ফুসফুস জনিত সমস্যা, জ্বরের সঙ্গে শাসকষ্ট, উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর এবং শাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। তবে কারও কারও গলা ব্যথা, কাশি ও ডায়রিয়াও ছিল। এগুলো করোনাভাইরাসের প্রধানতম উপসর্গ। তবে এর মধ্যে অনেক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
তরুণ চিকিৎসক ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকদের ওয়াই স্যাব নামের সংগঠনের ২০ জনের একটি টিম সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করছি। প্রতিদিন প্রতি চিকিৎসকের কাছে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি কল আসে। প্রায় সবারই জ্বর, গলা ব্যাথা, কাশিসহ এ জাতীয় সমস্যা। এ ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
জানা যায়, চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্ত ও সন্দেহজনক মোট রোগীর সংখ্যা ৭০ জন। এর মধ্যে নগরে ৩৯ এবং উপজেলায় ৩১ জন। এর মধ্যে ১০ বছরের নিচে ২ জন, সত্তরোর্ধ্ব আছেন দুইজন, ১০-২০ বছরের ৪ জন, ২১-৩০ বছরের ১৮ জন, ৩১-৪০ বছরের ১৩ জন, ৪১-৫০ বছরের ১১ জন ৫১-৬০ বছরের ৭ জন এবং ৬১-৭০ বছরের ৪ জন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন