সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

সোনালি ফসলে হাসবে ১২ হাজার একর জমি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

সোনালি ফসলে হাসবে ১২ হাজার একর জমি

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পয়াতের জলার ১২ হাজার একর জমিতে এবার ফসলের চাষ হবে। এ জমিগুলো ২০ বছর ধরে জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি ছিল। সম্প্রতি ওই এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে খাল খনন করা হয়েছে। এসব অনাবাদি জমিতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকৃত হবে পাঁচ হাজার কৃষক পরিবার। পরিবারগুলোতে সুদিনের আশায় খুশির আমেজ বইছে। সূত্রমতে, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর, বাকশীমুল, ষোলনল ও রাজাপুর ইউনিয়নের একটি বিশাল অংশ নিয়ে পয়াতের জলা। জলাবদ্ধতা সেই এলাকার কৃষি ও কৃষকের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবৈধ দখল ও বিভিন্ন অংশে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণের কারণে ঘুংঘুর ও পাগলী নদীর শাখা খালসমূহের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। এই কারণে পয়াতের জলার ১২ হাজার একর আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী পাঁচ হাজারের অধিক কৃষক পরিবার। পয়াতের জলার কৃষকরা রোপা-আমন ধান লাগাতে পারেন না। আবার কিছু কৃষক বোরো ধান আবাদ করলেও আগাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তা ঘরে তুলতে পারেন না। চলতি বছরের শুরুতে মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জলার চারপাশের খালের ২৫ কিমি. খাল পুনঃখনন কাজ করা হচ্ছে। ১৫ কিমি. এর বেশি খাল পুনঃখননের কাজ শেষ হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, যেখানে খাল কাটা হয়েছে সেখানের পাশের মাঠে সবুজ ফসল বাতাসে দোল খাচ্ছে। ফসলের মাঠে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বকের ঝাঁক উড়ে বেড়াচ্ছে। মাঠের পাশে হাঁসের দল খেলা করছে। খালে স্থানীয়রা মাছ ধরছে। খাল কাটা হওয়ায় খুশি এলাকার কৃষকরা। অন্যদিকে যেখানে খাল কাটার বাকি সেখানে জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয় হরিপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বলেন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে পয়াতের জলা সংশ্লিষ্ট জমিতে একদিকে জোঁকের উপদ্রব বেড়েছে, অন্যদিকে আগাছা জন্মে তা চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। খাল খননের ফলে মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। খাড়াইতাইয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন জানান, পয়াতের জলার আশপাশের ছোট বড় আরও প্রায় ১০ কিমি. খাল পুনঃখনন করতে হবে। এ ছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফসল পরিবহনের জন্য খননকৃত খালের পাড়ে ছোট ও মাঝারি আকারের ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি। ক্ষুদ্র সেচ বুড়িচং ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মানিক মিয়া বলেন, এখন খাল খনন হওয়ায় মানুষের উপকার হয়েছে।

 উপকৃত হয়েছে। মানুষের খশি দেখে ভালো লাগছে। বিএডিসির কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী আলাল উদ্দিন বলেন, এখানের মাঠে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হবে। কিছু জমিতে তিন ফসলও উৎপাদন হবে। প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, কৃষিবান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী দেশের কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে বিভিন্ন যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। তার অংশ হিসেবে মুজিব শতবর্ষে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ১২ হাজার একর জমি চাষের উপযোগী করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর