করোনায় মৃত রেখা আক্তার নামে এক নারীকে ভয়ে গোসল দিতে কেউ না আসায় শেষ পর্যন্ত এ কাজটা করেছেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন। তিনি নিজে রেখাকে গোসল করান। এরপর হয় দাফন। জানা যায়, রেখা আক্তারের বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার উজিয়ালখান গ্রামে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত শুক্রবার তিনি মারা যান। তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কেউ লাশের গোসল দেন না। করোনায় আক্রান্ত হবেন- এ ভয়ে স্বজনরা লাশ ফেলে রেখে গা-ঢাকা দেন। লাশ গোসল বা দাফনের জন্য এগিয়ে আসেননি কোনো পড়শিও। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে ছুটে এলেন ইউএনও খালেদা খাতুন। তিনি গোসলের ব্যবস্থা করেন। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিজ হাতে গোসল করানোর পর কাফনের কাপড় পরিয়ে দিলেন। ইউএনওকে সহযোগিতা করলেন স্বেচ্ছাসেবী মাহফুজা মিলি ও শামীমা আক্তার। জানাজা শেষে রাত ১২টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে রেখাকে দাফন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুনের অনুকরণীয় কর্তব্যনিষ্ঠার সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তোলে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তার প্রশংসায় মুখর হন।
কাউখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহম্মেদ সুমন বলেন, করোনায় মৃত রেখা আক্তারের দাফনের ব্যবস্থা করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ইউএনও। করোনাকালের সূচনা থেকেই আর্তের ত্রাণে তিনি নিরলস কাজ করে চলেছেন। তার কর্তব্যনিষ্ঠাকে সাধুবাদ জানাই।
ইউএনও খালেদা খাতুন বলেন, পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমি স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় লাশ গোসল শেষে দাফন সম্পন্ন করি। যা করেছি তা মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে করেছি। তবে করোনায় মৃতরা সংক্রমণ ছড়ায়-এটা একটা ভুল ধারণা। দেশ একটা দুঃসময় পার করছে। এ সময় মৃত সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ অনুচিত। ভুল ধারণা দূরীকরণে সচেতনদের এগিয়ে আসতে হবে।