শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই বাংলার মিলনমেলা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

দুই বাংলার মিলনমেলা

খগেন্দ্রনাথ (৩৫) থাকেন ভারতের কোচবিহারে। ২০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমিয়ে সেখানে বসবাস করেন। মা দিনোবালা (৫০) থাকেন বাংলাদেশের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নে। খগেন্দ্রনাথ প্রায় তিন বছর পর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এই মেলায়। মা তার গলা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে গঙ্গাপূজা উপলক্ষে দুই বাংলার মিলনমেলা হয়েছে। মেলায় স্বজনদের দীর্ঘ কয়েক বছর পর দেখে অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। মেলাজুড়ে ছিল কান্নার রোল। এ সময় তারা পরস্পরের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী আদান-প্রদান করেন। গতকাল ভোর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের ঘোঙ্গাগাছ সীমান্তের নো-ম্যান্স-ল্যান্ডে মালদহ নদীর তীরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সিতাই থানায় কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ভেড়ভেড়ি এলাকায় মালদহ নদীর তীরে গঙ্গাপূজা উপলক্ষে প্রতি বছর চৈত্রে এ মেলার আয়োজন করা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কঠোর নজরদারিতে সীমান্তের ৯১৫ নম্বর পিলারের কাছে এ মেলা বসে।

জানা গেছে, পাকিস্তান আমল থেকে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। করোনা মহামারির কারণে প্রায় তিন বছর মেলা বন্ধ ছিল। দুই বাংলার মানুষ একত্র হয়ে স্বজনদের দেখে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মেলায় আসা শ্যামলচন্দ্র বলেন, ‘পাসপোর্ট তৈরি করার সামর্থ্য নেই। তাই সীমান্তে গঙ্গাপূজা উপলক্ষে মেলায় ভারতীয় আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’

গোড়ল ইউনিয়নের বাসিন্দা হরিচন্দ্র রায় (৪৫) বলেন, ‘উভয় দেশের নাগরিকরা মালদহ নদীতে পুণ্য¯œান করেন। বিশেষ করে ভারতীয় নাগরিকরা কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ভেড়ভেড়ি এলাকায় গঙ্গাপূজা করার পর মালদহ নদীতে পুণ্য¯œান করে থাকেন।’

করোনার কারণে দীর্ঘদিন সীমান্ত মেলা বন্ধ ছিল তাই এ বছর দুই বাংলার মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘লালমনিরহাটসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক হাজার বাংলাদেশি এসেছিলেন এ মেলায়। অধিকাংশ মানুষ এসেছিলেন ভারতে বসবাসরত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে মেলাটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। এতে বিজিবি ও বিএসএফ দুই বাংলার মানুষদের বাধা প্রদান করেনি।’

তিনি বলেন, বেলা ৩টার দিকে মেলা শেষে দুই দেশের নাগরিকরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর