রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নৌকায় নদী পার শিক্ষার্থীদের

বিদ্যালয়ে কমছে উপস্থিতি ॥ দুশ্চিন্তায় অভিভাবক

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

নৌকায় নদী পার শিক্ষার্থীদের

জয়পুরহাট সদর উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদীর খেয়াঘাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এক তীরে স্কুল আর অপর পাড়ে রয়েছে জনবসতি। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে নদী। ৫০ বছরেও নদীতে সাঁকো বা সেতু না হওয়ায় একটি মাত্র ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়েছে কয়েক গ্রামের ছেলেমেয়েকে। নৌকায় নদী পার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম।  ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয় জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তুলসীগঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে পূর্বতীরে স্কুলটি। পূর্ব আর পশ্চিম দিকের ১৫ গ্রামের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে আসে। গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে, আমদই ইউনিয়নের মুরারীপুর, পাইকর, রাংতা, গোপালপুর, ঘোনাপাড়া, সুন্দরপুর, পুরানাপৈল ইউনিয়নের পাইকপাড়া, গোবিন্দপুর ও গঙ্গা দাশপুর। আমদই ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু ও পুরানাপৈল ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত বলেন, এই ১৫ গ্রামে প্রায় ১৬ হাজার মানুষের বাস। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। রাতে জরুরি যোগাযোগ দুরূহ হয়ে পড়ে। এখানে ব্রিজ হলে এ দুই ইউনিয়নের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। শিশুদের নদী পার হতে হয় একটি মাত্র ডিঙি নৌকায়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ, তদবির আর অনুরোধ করেও কোনো ফল হয়নি বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা খাতুন জানায়, ছোট ডিঙি নৌকায় নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় নৌকা থেকে নদীতে পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। বর্ষার সময় অনেকেই স্কুলে আসতে পারে না। চতুর্থ শ্রেণির জেমি, পঞ্চম শ্রেণির রিয়াদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের যাতায়াত সমস্যার কথা জানায়। পাইকপাড়া গ্রামের মেহেদি হাসান নামে এক অভিভাবক বলেন, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি, কারণ তাদের ডিঙি নৌকায় পার হতে হয়। গোবিন্দপুর গ্রামের আরেক অভিভাবক খাদিজা বেগম বলেন, একটি মাত্র নৌকা থাকায় অনেক সময় রোদ-বৃষ্টির মধ্যে শিশুদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। প্রধান শিক্ষক প্রণব চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ব্রিজ ছাড়া নদী পারাপারের এমন দুর্ভোগ নিয়ে ৫০ বছর ধরে ভুগছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া এখানকার সাধারণ মানুষজনকে সব সরকারি বা অন্যান্য দাফতরিক কাজের জন্য এই ডিঙি নৌকায় যাওয়া আসা করতে হয়। ১৫ গ্রামের মানুষের ওই একটি ডিঙি নৌকাই ভরসা। জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডিঙি নৌকায় যাতায়াত করছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আশা করি খুব শিগগিরই সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর