শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চিরিরবন্দরে তৈরি জ্যাকেটের কদর দেশজুড়ে

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

চিরিরবন্দরে তৈরি জ্যাকেটের কদর দেশজুড়ে

চিরিরবন্দরের একটি কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকরা

ঝুট কাপড়ের পোশাকের পর এবার দেশের বাজারে যাচ্ছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের পল্লী এলাকায় গড়া ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের তৈরি জ্যাকেট, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও শিশুদের পোশাক। আরামদায়ক ও রকমারি ডিজাইনের এ পোশাকের কদর রয়েছে উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, চিরিরবন্দর উপজেলায় অর্ধ শতাধিক ছোট ছোট গার্মেন্টসে উৎপাদিত পোশাক থেকে বছরে কোটি টাকার বেশি আয় হয়। স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থী, স্বামী, পরিত্যক্তা, বিধবা মহিলা ও গ্রামের বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ায় কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের। এখানে তৈরি জ্যাকেট চাহিদা মেটাচ্ছে নিজ জেলা ছাড়াও সিলেট, মৌলভীবাজার, ঢাকা, বগুড়া, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। এতে মালিকদের পাশাপাশি কারিগররাও স্বনির্ভর হচ্ছেন। শীতকালে বিভিন্ন ডিজাইনের জ্যাকেট, লেডিস কোট এবং গ্রীষ্মকালে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি এবং বাচ্চাদের পোশাকও তৈরি হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এসব ক্ষুদ্র কারখানার পরিধি বেড়ে অপার সম্ভাবনাময় খাত হয় উঠতে পারে। ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে কর্মসংস্থানের। ২০০৮ সালে চিরিরবন্দরের রাণীরবন্দরের সড়কে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আতিয়ার রহমান স্বল্প পরিসরে মেসার্স মা গার্মেন্টস নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। একটি মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। এর আয় দিয়ে পর্যায়ক্রমে মেশিন বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এখানে ইপিজেডের প্রশিক্ষিত শ্রমিকরা সোয়েটার তৈরিতে যুক্ত হন। এছাড়া স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী, স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা মহিলা ও গ্রামের বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। আতিয়ার রহমান জানান, এক যুগ ধরে বিভিন্ন প্রতিকূলতা কাটিয়ে বর্তমানে ২০টি মেশিন স্থাপন করেছি। এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৩৫ জনের অধিক কর্মী জড়িত রয়েছেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বল্প সুদে ঋণ পেলে কারখানার আরও পরিধি বাড়ানো যেত। সাজেদা গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রতিটি জ্যাকেট তৈরিতে ৮০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। প্রতিজন শ্রমিক দিনে ৭-৮টি জ্যাকেট তৈরি করতে পারেন। মহিলাদের জ্যাকেট ৬০০ ও ছোট জ্যাকেট ৪৫০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। চিরিরবন্দরের রাণীরবন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম জানান, এসব ক্ষুদ্র গার্মেন্টস অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বেকারত্ব দূরীকরণে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। সারা দেশের গার্মেন্টসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখানকার শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং শ্রমিক-কর্মীদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে।

 

সর্বশেষ খবর